তেহরান ও তেলআবিবের মধ্যকার চলমান উত্তেজনার মধ্যে চীন ও রাশিয়ার ভূমিকাকে ঘিরে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম চ্যানেল ১৪ দাবি করেছে, ইরানকে ক্ষেপণাস্ত্রসহ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক উপাদান পৌঁছে দিতে এই দুই বৈশ্বিক শক্তি গোপনে বিমান পরিবহন সহায়তা দিচ্ছে। এই অভিযোগ এমন সময় উঠলো, যখন ইরান ও ইসরায়েল কার্যত যুদ্ধাবস্থায় রয়েছে এবং পুরো মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ছে।

Source: Ittefaq | 16 June 2025 | Pic: Collected
বিশ্লেষকরা বলছেন, চীন ও রাশিয়ার এই ভূমিকা মধ্যপ্রাচ্যে আঞ্চলিক জোট রাজনীতিকে আরও জটিল করে তুলছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তেহরান চীনের কাছ থেকে হাজার হাজার টন ব্যালিস্টিক মিসাইল উপাদান অর্ডার করেছে। এই তথ্য দিয়েছে প্রভাবশালী আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, যারা ‘লেনদেনের সঙ্গে পরিচিত’ একাধিক সূত্রকে উদ্ধৃত করে বলেছে, ইরান নিজেদের সামরিক শক্তি পুনর্গঠনের উদ্যোগ নিচ্ছে।
চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই প্রকাশ্যে ইরানের প্রতি তাদের সমর্থনের কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “ইসরায়েলের আক্রমণ অগ্রহণযোগ্য এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে।” তবে তিনি এটাও জানান, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে কূটনৈতিক আলোচনার দরজা এখনও পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়নি।
অন্যদিকে, রাশিয়াও ইসরায়েলের আক্রমণের কড়া সমালোচনা করেছে। ক্রেমলিন থেকে বলা হয়, তেলআবিবের আক্রমণ মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই পরিস্থিতির মধ্যে, যুক্তরাষ্ট্র ৬ জুন তারিখে এক সঙ্গে ১০ ব্যক্তি ও ৭টি প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, যারা ইরানের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনে যুক্ত। নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছে হংকং-ভিত্তিক ‘হিরো কম্পেনিয়ন লিমিটেড’, ‘প্লজকম লিমিটেড’ এবং ‘কিনলার ট্রেডিং লিমিটেড’-এর মতো প্রতিষ্ঠান।
বিশ্লেষকদের মতে, এই নিষেধাজ্ঞা ও বিমান চলাচল সম্পর্কিত তথ্য একত্র করলে বোঝা যায়, ইরান এখন শুধু কূটনৈতিক নয়, সামরিক দিক থেকেও এক কঠিন প্রস্তুতি নিচ্ছে। এদিকে, ইসরায়েল এই পরিস্থিতিকে আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করছে, যাতে পশ্চিমা দেশগুলো তাদের পক্ষে অবস্থান নেয়।
চীনের ভূমিকা বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়, কারণ দেশটি ঐতিহাসিকভাবে মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতে সরাসরি সামরিক জোটে যুক্ত না হলেও, এবার ইরানের পাশে দাঁড়িয়ে ইসরায়েলবিরোধী অবস্থান স্পষ্ট করেছে।