মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে ইরান কখনোই ইসরায়েলপন্থী শক্তির সঙ্গে আপস করবে না বলে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। তিনি বলেন, “আমরা জায়নবাদীদের প্রতি কোনো দয়া দেখাবো না।”

Source: BBC Bangla | 18 June 2025 | Pic: Collected
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন প্রকাশ্যে ইরানকে ‘নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের’ আহ্বান জানিয়েছেন, তখনই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার) এ এক বার্তায় এই প্রতিক্রিয়া জানান খামেনি। এই বার্তায় ইরানিদের মধ্যে আরও প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বানও জানান তিনি।
খামেনির এই কড়া বার্তার পরপরই ইসরায়েল আবারও নতুন করে হামলা চালায় তেহরানের কাছে একটি ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্রে। ইরানি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, হামলায় তেহরানের ইমাম হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ও লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
এদিকে ইরানও জবাব দিতে দেরি করেনি। মঙ্গলবার রাতে তারা ইসরায়েলের রাজধানী তেল আভিভে হামলা চালায়। হামলার আগেই তেল আভিভের বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়। ইরানের আইআরজিসি জানিয়েছে, ‘ফাত্তাহ-১’ নামক একটি হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলি বিমানঘাঁটি লক্ষ্য করে ছোড়া হয়েছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, তারা ইরান থেকে উৎক্ষেপণকৃত নতুন ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে এবং প্রতিহত করতে তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় রয়েছে।
এই পাল্টাপাল্টি হামলার মধ্য দিয়ে ইরান-ইসরায়েল সংঘাত ষষ্ঠ দিনে গড়িয়েছে। দুই দেশের মধ্যে ক্রমেই বাড়ছে সামরিক উত্তেজনা, যার ফলে গোটা মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, মার্কিন প্রশাসনও ইসরায়েলের পাশে রয়েছে। হোয়াইট হাউস সূত্রে জানা গেছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলের সঙ্গে মিলে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে সামরিক হামলা চালানোর চিন্তা করছেন।
তবে এখানেই শেষ নয়। গত চার দিনে যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপে অন্তত ৩০টি যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের বরাতে জানা গেছে, এই মোতায়েন একটি সম্ভাব্য সামরিক অভিযানকে সামনে রেখেই করা হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরান ও ইসরায়েলের এই সংঘাত শুধু দুই দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, বরং এতে পুরো মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলেও তারা মত দিয়েছেন।