মিনিয়াপোলিসের Annunciation Catholic Church-এর প্রার্থনালয়ে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ গুলির ঘটনায় দুই শিশু নিহত ও ১৭ জন আহত হওয়ার আগে হামলাকারী রবিন ওয়েস্টম্যান (২৩)-এর একটি ভয়ঙ্কর ভিডিও অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছিল। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম CNN, AP News এবং BBC জানিয়েছে, হামলার আগের ঘণ্টায় ইউটিউবের “Robin Westman” নামের একটি চ্যানেল থেকে ওই ভিডিও আপলোড হয়। ভিডিওটিতে দেখা যায়, ওয়েস্টম্যান চার্চের অভ্যন্তরীণ নকশা বা পরিকল্পনা স্কেচ মাটিতে ছুঁড়ে ফেলে তাতে বারবার ছুরিকাঘাত করছে। সেই নকশায় চার্চের আসনবিন্যাস (pew line), ক্রস চিহ্ন এবং প্রার্থনালয়ের বিন্যাস স্পষ্টভাবে অঙ্কিত ছিল। ভিডিওর পেছনে একটি ট্রান্সজেন্ডার গর্ব পতাকাও দেখা যায়, যা বার্তাটিকে আরও বিতর্কিত ও বিদ্বেষমূলক করে তোলে।

28 August 2025 | Pic: Collected
ভিডিওতে কেবল পরিকল্পনার ইঙ্গিতই নয়, তার সঙ্গে ওয়েস্টম্যানের হাতে থাকা অস্ত্র, গুলির ম্যাগাজিন ও নানা হিংসাত্মক বার্তাও প্রদর্শিত হয়। অস্ত্রে লেখা ছিল, “ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হত্যা করো”, “ইসরায়েলের পতন ঘটাও”, “ভারতে নিউক্লিয়ার হামলা করো”—এছাড়া কিছু বার্তা সাইরিলিক ভাষায় খোদাই করা ছিল। আরও চাঞ্চল্যকর বিষয় হলো, তার অস্ত্রে আগের কুখ্যাত স্কুল হামলাকারীদের নামও লেখা ছিল। যা স্পষ্ট করে দেয়, ওয়েস্টম্যান পূর্বপরিকল্পিতভাবেই এই হামলার ছক কষেছিল এবং অতীতের সন্ত্রাসীদের অনুসরণ করতে চাইছিল।
ঘটনার পরপরই ভিডিওটি ইউটিউব থেকে সরিয়ে ফেলা হয়, তবে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো সেটি জব্দ করে বিশ্লেষণ শুরু করেছে। মিনেসোটা পুলিশ ও FBI জানিয়েছে, ভিডিও এবং সংশ্লিষ্ট অনলাইন পোস্টগুলো হামলাকারীর মানসিক অবস্থা, উদ্দেশ্য এবং আন্তর্জাতিক সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষের ইঙ্গিত বহন করছে। তারা এই ঘটনাকে সম্ভাব্য গৃহসন্ত্রাস (domestic terrorism) হিসেবে তদন্ত করছে।
গুলিবর্ষণের ঘটনায় দুই শিশু প্রাণ হারায়, আহত হয় ১৭ জন—এর মধ্যে ১৪ জন শিশু ও তিনজন প্রাপ্তবয়স্ক। সৌভাগ্যবশত, চিকিৎসকরা জানিয়েছেন আহতদের সবাই বেঁচে যাবেন। স্কুলের শিক্ষক ও চার্চের কর্মীরা ঘটনার সময় বীরত্বপূর্ণভাবে শিক্ষার্থীদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। ঘটনার পর মিনেসোটা গভর্নর টিম ওয়ালজ ও মিনিয়াপোলিস মেয়র জ্যাকব ফ্রে শোক প্রকাশ করেছেন এবং অস্ত্র আইন কঠোর করার আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে, রবিন ওয়েস্টম্যান গুলির ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই চার্চের পার্কিং লটে নিজের অস্ত্র দিয়ে আত্মহত্যা করে। পুলিশের হাতে উদ্ধার হওয়া তার রাইফেল, শটগান ও পিস্তল এখন তদন্তের অংশ। ভিডিওর পূর্বপ্রকাশ এবং এতে লুকানো বিদ্বেষপূর্ণ বার্তা সমাজকে নতুন করে ভাবিয়ে তুলেছে, কিভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত চরমপন্থী কনটেন্ট আগাম শনাক্ত করে এমন হত্যাযজ্ঞ প্রতিরোধ করা যায়।