যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি নতুন প্রস্তাব পেশ করেছেন, যার আওতায় আমদানি করা ওষুধের ওপর বড় পরিমাণ কর আরোপ করা হবে। এই পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য হলো দেশীয় ফার্মাসিউটিক খাতকে সমর্থন দেওয়া এবং বিদেশি ওষুধের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নির্ভরতা কমানো। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, এই কর নীতি কার্যকর হলে ওষুধের দাম বাড়তে পারে এবং বাজারে ঘাটতি দেখা দিতে পারে।

1 September 2025 | Pic: Collected
এই পদক্ষেপের ফলে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে দীর্ঘমেয়াদী অসুস্থ রোগীদের ওপর, যারা নিয়মিত ওষুধ গ্রহণের ওপর নির্ভরশীল। ফার্মাসিউটিক কোম্পানিগুলো ইতিমধ্যেই সতর্ক করেছে যে, আমদানি খরচ বেড়ে গেলে ওষুধের মূল্য বাড়াতে হবে এবং বাজারে কিছু ওষুধের অভাব দেখা দিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা যেমন Medicaid, Medicare ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সংস্থা ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখে, তবে এই নতুন কর প্রবর্তন হলে নিয়ন্ত্রণ কার্যকর নাও হতে পারে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দেশীয় উৎপাদন বাড়ানো হবে ঠিকই, কিন্তু আমদানিকৃত ওষুধের দাম বৃদ্ধির কারণে রোগীরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এবং চিকিৎসা গ্রহণে অসুবিধার সম্মুখীন হবেন।
আন্তর্জাতিক বাজারেও এর প্রভাব পড়বে, কারণ যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বড় ওষুধ আমদানিকারক দেশ, ফলে আমদানি করের কারণে আন্তর্জাতিক মূল্য বৃদ্ধিও দেখা দিতে পারে। একই সময়ে, ফার্মাসিউটিক খাতে বিনিয়োগের ধারা ব্যাহত হতে পারে, কারণ কোম্পানিগুলো যুক্তরাষ্ট্রে নতুন উৎপাদন সম্প্রসারণ বা গবেষণায় বিনিয়োগ কমাতে পারে। কিছু বিশ্লেষক মনে করছেন, ট্রাম্পের পদক্ষেপ দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে সহায়ক হতে পারে, কিন্তু এর সঙ্গে যুক্ত ঝুঁকি যেমন দাম বৃদ্ধি ও ঘাটতি এড়ানো কঠিন। রোগী, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যেই সতর্ক করেছেন যে, এই নীতি কার্যকর হলে সাধারণ মানুষ ও ওষুধের বাজার দুই ক্ষেত্রেই বিরূপ প্রভাব পড়বে।
অন্যদিকে, ট্রাম্পের সমর্থকরা যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য শিল্পকে শক্তিশালী করা এবং দেশীয় উৎপাদন বাড়ানোকে প্রধান লক্ষ্য হিসেবে দেখছেন। ফলে এই নীতি নিয়ে বিতর্ক চলমান রয়েছে, এবং আন্তর্জাতিক ও দেশীয় বিশ্লেষকরা দেখছেন যে, এই কর প্রবর্তন বাজারে স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে পারে এবং রোগীদের জন্য দীর্ঘমেয়াদে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। সবশেষে বলা যায়, ট্রাম্পের পরিকল্পিত ওষুধ কর নীতি দেশীয় ফার্মাসিউটিক খাতকে কিছুটা শক্তিশালী করতে পারে, কিন্তু রোগীদের জন্য দাম বৃদ্ধি, বাজারে ঘাটতি এবং আন্তর্জাতিক প্রভাবের মতো বড় চ্যালেঞ্জও তৈরি করতে পারে। এটি স্বাস্থ্য নীতি, অর্থনীতি এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সব ক্ষেত্রেই বড় প্রভাব ফেলতে পারে।