back to top

এক চুমুকে পাল্টে গেলো বিশ্বশক্তির ভারসাম্য, ট্রাম্প-চীন Rare Earths চুক্তির অজানা গল্প

একসময় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বলা হতো “বাণিজ্য যুদ্ধের সিজার”। তিনি যখন Truth Social-এ একটি পোস্ট দিয়ে ঘোষণা দিলেন, “চীনের সঙ্গে আমাদের রেয়ার আর্থ চুক্তি চূড়ান্ত,” তখন অনেকে কেবল এটিকে নির্বাচনী শ্লোগান ভেবেছিলেন। কিন্তু বাস্তবতা ছিল ভিন্ন—এটি ছিল এক নিঃশব্দ কূটনৈতিক ভূকম্পন।

এই ঘোষণায় তিনি বলেন, “চুক্তিটি এখন শুধু আমি এবং প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের চূড়ান্ত সম্মতির অপেক্ষায়।” সূত্র অনুযায়ী, চীন রেয়ার আর্থ উপাদান সরবরাহে রাজি হয়েছে, আর আমেরিকা চীনা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ দেওয়ার কথা ভাবছে।

Source: BBC | 12 June 2025 | Pic: Collected


রেয়ার আর্থ উপাদান—যেগুলোকে বলা হয় “প্রযুক্তি সভ্যতার অনুজ্ঞাপত্র”—এই মুহূর্তে পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক সম্পদগুলোর একটি। স্মার্টফোন, ফাইভজি টাওয়ার, ইলেকট্রিক যানবাহন, এমনকি সামরিক ড্রোনের প্রাণ এই উপাদানগুলোর ওপর নির্ভরশীল।

চীন বর্তমানে বিশ্বের ৮০-৯০% রেয়ার আর্থ প্রক্রিয়াজাতকরণের নিয়ন্ত্রক। এই অবস্থায় ট্রাম্পের চুক্তি আমেরিকার জন্য এক ধরনের “অভ্যন্তরীণ রিসেট বাটন” হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

এ চুক্তিতে একটি মানবিক স্পর্শও আছে। চীন দীর্ঘদিন ধরে আমেরিকায় উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্র সংকুচিত হওয়ায় অসন্তুষ্ট ছিল। সেই দ্বন্দ্ব মেটাতে, ট্রাম্প প্রশাসন কিছু ‘বিশেষায়িত ক্ষেত্রে’ চীনা শিক্ষার্থীদের জন্য প্রবেশাধিকার সহজ করবে—এমনটি উঠে এসেছে BBC-র প্রতিবেদন থেকে।

এদিকে চীন, ছয় মাসের জন্য রেয়ার আর্থ উপাদানের সরবরাহ লাইন স্থিতিশীল রাখতে প্রস্তুত, শর্ত হলো, প্রক্রিয়াকরণ ও রপ্তানি লাইসেন্সে সহজতা।

এই চুক্তি এমন এক সময়ে এসেছে, যখন যুক্তরাষ্ট্র চীনের পণ্যের ওপর ৫৫% পর্যন্ত শুল্ক আরোপের কথা বলেছে। তবে ট্রাম্প স্পষ্ট করে দিয়েছেন, কিছু ক্ষেত্রে তা কমিয়ে ১০% পর্যন্ত নামিয়ে আনা হতে পারে, যদি চীন আন্তরিক হয়।

বিশ্লেষকদের মতে, এটি একদিকে বন্ধুত্বের বার্তা, অন্যদিকে একটি কৌশলী হুমকি। যেকোনো পক্ষ ‘চুক্তি ভাঙলে’ বিপরীতে রয়েছে শুল্কের কঠিন প্রাচীর।

এই চুক্তির ঘোষণার পরপরই প্রযুক্তি খাতে বাজারে স্বস্তি দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানি ও ইভি নির্মাতাদের মধ্যে নতুন আশাবাদ তৈরি হয়েছে। তবে দীর্ঘমেয়াদে এই সম্পর্ক কতটা টিকবে, তা নিয়ে সন্দেহও রয়ে গেছে।

অনেকে ভাবছেন—এটি কি চীনের সঙ্গে উত্তেজনার অবসান? নাকি ২০২4 নির্বাচনকে সামনে রেখে ট্রাম্পের নতুন ‘ডিপ্লোম্যাটিক ব্র্যান্ডিং’?

যদিও ট্রাম্পের পক্ষ থেকে একে ‘চূড়ান্ত’ বলা হয়েছে, চীনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি আসেনি। বিষয়টি বর্তমানে ‘নীতিনির্ধারকদের’ আলোচনায় রয়েছে।

- Advertisement -spot_img
Related News
- Advertisement -spot_img
Explore More
- Advertisement -spot_img