কানাডার অন্টারিও প্রদেশের লিন্ডসি শহরের কাওয়ার্থা লেকস এলাকায় একটি শান্ত হ্রদে বায়োমণ্ডলের ছোঁয়ায় বিশ্রাম করতে গিয়ে অপ্রত্যাশিতভাবে দুই বাংলাদেশি জীবন হারালেন। এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা আমাদের হৃদয় ছিঁড়ে দিচ্ছে—কারণ বলার মতো আরও অনেক কিছুই শোনার আছে এই যন্ত্রণা আর আবেগপূর্ণ নিঃশব্দে ভরা ঘটনার পেছনে।

Source: Ittefaq | 9 June 2025 | Pic: Collected
বাংলাদেশ বিমানের অভিজ্ঞ ক্যাপ্টেন সাইফুজ্জামান ‘গুড্ডু’ পরিবারের সাথে ছুটি কাটাতে কানাডায় সফর করেছিলেন। একই সময়ের একই নৌকায় ছিলেন সেলামি হিসেবে ভোগ করা টিম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সাবেক বিইজি এমইএর ভাইস প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ হিল রাকিব। তাদের সাথে ছিল রাকিবের ছেলে। হ্রদের বুকে সেই ছোট নৌকাটি হঠাৎ ওঠানামা করতে করতে উল্টে যায়। মুহূর্তেই রাকিবের ছেলে নিজে সাঁতরে হ্রদের কলাগাছে উঠে বাঁচলেন, কিন্তু অভিজ্ঞ পাইলট গুড্ডু এবং ব্যবসায়ী রাকিব পানির তলে হারিয়ে গেলেন ।
স্থানীয় পুলিশ, মেরিন ও এভিয়েশন টিম একযোগে তল্লাশি চালিয়ে ১–১.৫ ঘণ্টার মধ্যেই তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করে। ঘটনার সময় কারও শরীরে লাইফ-জ্যাকেট ছিল না—এবং হঠাৎ হাওয়া ওঠার কারণেই নৌকা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিল।
এই দুই ব্যক্তি বাংলাদেশের ব্যানার উঁচু করেছেন—একজন পাইলট হিসেবে আন্তর্জাতিক ব্যান্ড, অপরজন শিল্প ও বস্ত্র খাতের এক অগ্রণী মুখ। তাদের এই জার্নি যেন এক মর্মান্তিক ম্যাজিকের শেষ হয়ে গেল হ্রদের পানিতে।
পরিবার, বন্ধুবান্ধব ও প্রবাসী বাংলাদেশীদের হৃদয় আজ গভীরভাবে আহত। স্থানীয় বাংলাদেশি কমিউনিটিতে শোকের ছায়া হয়েছে, কারণ লিন্ডসির এই হ্রদটি তাদের উৎসবের বাড়িতে পরিণত হয়েছিল—এবার ঘটেছে অবিনাশী এক সংকট।
এই ঘটনা প্রমাণ করেছে—জীবনের অস্থায়ীতা, আশ্চর্য ও শ্লথাতির প্রতীক হতে পারে। হ্রদে সেই শান্তির পেছনে লুকিয়ে আছে বিপদের আকস্মিক ছায়া। আবার একই সঙ্গে এটি জীবন ও মৃত্যু, আনন্দ ও শোক—সব অমিশ্র অনুভূতির এক ক্ষণজীবী মিলনস্থান।
এখন প্রশ্ন ওঠে—কীভাবে এই দুর্ঘটনা ভবিষ্যতে প্রতিহত করা যায়? লাইফ-জ্যাকেটের মতো নিরাপত্তা সরঞ্জামের প্রয়োজনীয়তা এত সহজে অগ্রাহ্য করছি কেন? এই দায়বোধ এখন আমাদের মনের আড়ালে লুকিয়ে থাকতে পারে না। আমাদের উচিত সতর্ক হওয়া: প্রতিটি নৌযাত্রা মানে বেঁচে থাকার শর্ত—সেফটি একাধারে প্রয়োজনীয় ও জরুরি।