কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আসন্ন জি৭ সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানোকে কেন্দ্র করে কানাডার রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। এই সিদ্ধান্তটি এমন এক সময়ে এসেছে, যখন ২০২৩ সালে ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় শিখ নেতা হারদীপ সিং নিজ্জারের হত্যাকাণ্ডে ভারতের সরকারের জড়িত থাকার অভিযোগে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক চরমে পৌঁছেছে। কানাডার ফেডারেল পুলিশ জানিয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে ভারতের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের হাত রয়েছে, এবং ইতিমধ্যে চারজন ভারতীয় নাগরিককে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

Source: The Guardian | 7 June 2025 | Pic: Collected
বিশ্ব শিখ সংস্থা (WSO) এই আমন্ত্রণকে “কানাডার মূল্যবোধের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা” বলে আখ্যায়িত করেছে। সংস্থার আইন উপদেষ্টা বলপ্রীত সিং বলেন, “মোদির আমন্ত্রণ কানাডার শিখ সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ ও বেদনার সৃষ্টি করেছে।” WSO-এর সভাপতি ড্যানিশ সিং এই সিদ্ধান্তকে “লজ্জাজনক ও বিপজ্জনক” বলে মন্তব্য করেছেন, বিশেষ করে যখন ভারত নিজ্জারের হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করছে এবং কানাডার তদন্তে সহযোগিতা করছে না।
প্রধানমন্ত্রী কার্নি তার সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেন, “ভারত বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি, সর্বাধিক জনবহুল দেশ এবং বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খলের কেন্দ্রে রয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “এমন কিছু দেশ আছে, যাদের এই আলোচনায় থাকা উচিত, এবং আমি জি৭ চেয়ার হিসেবে অন্যদের সঙ্গে পরামর্শ করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
মোদির আমন্ত্রণ গ্রহণ এবং কার্নির সঙ্গে ফোনালাপ দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের বরফ গলানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে। মোদির উপস্থিতি জি৭ সম্মেলনে ভারত-কানাডা সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে, যদিও নিজ্জার হত্যাকাণ্ডের তদন্ত এখনো চলমান। এই পরিস্থিতিতে, দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সমঝোতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।
জি৭ সম্মেলনে মোদির আমন্ত্রণ কানাডার অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বিতর্কের জন্ম দিলেও, এটি আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই সিদ্ধান্ত দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের নতুন অধ্যায় সূচিত করতে পারে, যদি উভয় পক্ষ পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহযোগিতার মাধ্যমে এগিয়ে যায়।