back to top

নাহিদ ইসলামের হুঙ্কার: আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল ও কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবি!

সোর্সঃ কালের কন্ঠ | তারিখঃ ২ মে ২০২৫ | ছবিঃ সংগৃহীত


জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম একটি জ্বালাময়ী দাবি তুলেছেন: আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক নিবন্ধন বাতিল এবং বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন দলটির সমস্ত রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হোক। শুক্রবার বিকেলে ঢাকার গুলিস্তানে বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে এক জনসমাবেশে এই দাবি জানান তিনি। এই সমাবেশ ছিল জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের রক্তের ঋণ শোধের আহ্বান, যা জনমনে গভীর আলোড়ন তুলেছে। [সূত্র: দৈনিক সংবাদ]

নাহিদ ইসলাম বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নয় মাস ধরে আমরা আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষেধাজ্ঞার দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছি। এই দীর্ঘ সময় আমাদের সম্মিলিত ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি।” তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে দেশের সার্বভৌমত্বে আঘাত করেছে। এছাড়াও, ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে গণহত্যা, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং সর্বশেষ জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলা ও হত্যাকাণ্ডের জন্য এই দলকে দায়ী করেন তিনি। তাঁর কথায়, “আওয়ামী লীগ কোনো রাজনৈতিক দল নয়, এটি একটি ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসী সংগঠন।”

তিনি জোর দিয়ে বলেন, গণহত্যার বিচার চলাকালীন আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল ও তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা জরুরি। তিনি সমালোচনা করে বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আওয়ামী লীগ নেতারা জামিনে মুক্তি পাচ্ছেন এবং বিভিন্ন দল তাদের পুনর্বাসন করছে। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ভূমিকা নিয়েও তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। নির্বাচন সংস্কার কমিশন আওয়ামী লীগ নেতাদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণার সুপারিশ করলেও, ইসি তাতে সম্মত নয়। নাহিদ প্রশ্ন তুলেন, “ইসি কার স্বার্থ রক্ষা করছে?”

জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনের উল্লেখ করে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নির্দেশে আওয়ামী লীগ ১৪০০ মানুষকে হত্যা করেছে। তিনি কিছু সাংবাদিকের সমালোচনা করে বলেন, “যারা শেখ হাসিনাকে গণহত্যাকারী বলতে অস্বীকার করেন, তারা সাংবাদিক নন, তারা হাসিনার সহযোগী।”

নাহিদ ইসলাম আরও দাবি করেন, জুলাই সনদ ঘোষণার মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। তিনি নতুন সংবিধান প্রণয়নের জন্য গণপরিষদ নির্বাচন এবং শহীদ ও আহতদের পরিবারের জন্য মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। তিনি জনগণের প্রতি আস্থা প্রকাশ করে বলেন, “জুলাই আন্দোলনে জনগণ যে ভরসা রেখেছিল, তা ভবিষ্যতেও থাকবে। আমরা দ্রুত সুসংগঠিত হয়ে প্রতিটি ঘরে এনসিপির আহ্বান পৌঁছে দেব।”

সমাবেশে এনসিপির অন্যান্য নেতারা, যেমন আখতার হোসেন, নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সামান্তা শারমিন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এই সমাবেশ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে এবং রাজনৈতিক সংস্কারের দাবিতে একটি শক্তিশালী বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছে। জনগণ এখন প্রশ্ন তুলছে: আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ কী? এই দাবি কি বাস্তবায়ন হবে, নাকি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রে হারিয়ে যাবে?

- Advertisement -spot_img
Related News
- Advertisement -spot_img
Explore More
- Advertisement -spot_img