সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদাকে হেনস্তার ঘটনায় যে ব্যক্তিকে ভিডিওতে সাদা পাঞ্জাবি পরে জুতা মারতে দেখা গেছে, তিনি স্বেচ্ছাসেবক দলের মুজাম্মেল হক ঢালী বলে পুলিশ জানিয়েছে। তবে মুজাম্মেল দাবি করেছেন, তাকে ভিডিওতে দেখা গেলেও সেটি আসলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে এবং তিনি সেখানে ছিলেন না। এ ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিএনপির মামলার আসামি হওয়ার মাত্র ছয় ঘণ্টার মধ্যে উত্তরা এলাকায় কিছু ‘ছাত্র-জনতা’ নুরুল হুদার বাসায় গিয়ে তাকে লাঞ্ছিত করে, ডিম ছুঁড়ে মারে, গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয় এবং লুঙ্গি-গেঞ্জি পরা অবস্থায় রাস্তায় নামিয়ে অপমানজনক আচরণ করে।

Source: Ittefaq | 24 June 2025 | Pic: Collected
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, পুলিশের পোশাকধারী সদস্যদের উপস্থিতিতেই এই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার পর স্বেচ্ছাসেবক দলের ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি শেখ ফরিদ হোসেন বলেন, মুজাম্মেল তাদের দলের সদস্য এবং ভিডিওতে যে দৃশ্য দেখা যাচ্ছে তা নিয়ে তারা দলীয় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। ফরিদ আরও জানান, ঘটনার সময় তিনি গুলশানে ছিলেন এবং ঘটনার খবর পেয়ে নেতাকর্মীদের আইন হাতে তুলে না নেওয়ার পরামর্শ দেন। মুজাম্মেলের সঙ্গে কথা বলার পর ফরিদ বলেন, “সে বলেছে, ভিডিওটি এডিট করা হয়েছে, আমি সেখানে ছিলাম না।”
তবে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভিডিও ফুটেজের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে এবং জিডি করা হয়েছে, এখনো পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি বা কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। মানবাধিকার সংগঠন ও রাজনৈতিক মহল থেকে এ ধরনের মব-জাস্টিস সংস্কৃতির নিন্দা জানানো হয়েছে এবং আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। সরকারের তরফ থেকেও বলা হয়েছে, কেউ যদি হেনস্তার সঙ্গে জড়িত থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুরো ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা ও সামাজিক প্রতিক্রিয়া আরও বেড়েছে, কারণ একজন সাবেক রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিকে এভাবে অপমানজনক আচরণের শিকার করা হলে সেটি শুধু ব্যক্তি নয়, রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলার প্রশ্নকেও সামনে নিয়ে আসে। সূত্র: ইত্তেফাক, বাংলা ট্রিবিউন, ঢাকা পোস্ট।