পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে সাম্প্রতিক সামরিক উত্তেজনায় নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ দাবি করেছেন, পাকিস্তান বিমান বাহিনী (PAF) ছয়টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে একটি মিরাজ ২০০০ ফাইটার জেট। এই ঘটনা কাশ্মীরের শ্রীনগরের পূর্বাঞ্চলীয় পামপুর এলাকায় ৬ থেকে ৭ মে রাতের কোনো এক সময় ঘটেছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

Source: Ittefaq | 16 May 2025 | Pic: Collected
১৫ মে কামরায় পাকিস্তান বিমান বাহিনীর একটি অপারেশনাল ঘাঁটি পরিদর্শনকালে প্রধানমন্ত্রী শরিফ এই দাবি করেন। তিনি বলেন, “এই ঘটনা পাকিস্তান বিমান বাহিনীর অসাধারণ যুদ্ধ দক্ষতা এবং মাতৃভূমি রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীর অটল প্রতিশ্রুতির প্রমাণ।”
পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) বিবৃতিতে বলা হয়, কামরায় ঘাঁটি পরিদর্শনের সময় প্রধানমন্ত্রী পাইলট, প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদসহ সামনের সারির সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন এবং তাদের পেশাদারিত্ব, নিখুঁত দক্ষতা ও জাতীয় প্রতিরক্ষা বিষয়ে দৃঢ় অঙ্গীকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
শাহবাজ বলেন, “ভারতের অকারণ আগ্রাসনের পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী সংযম, কৌশলগত দূরদর্শিতা দেখিয়েছে এবং কার্যকর প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। তাদের দ্রুত ও পরিকল্পিত জবাব শুধু হুমকিটিকে নিরসনই করেনি, বরং শত্রুপক্ষের সামরিক অবকাঠামোয় বড় ধাক্কা দিয়েছে। এটি প্রমাণ করেছে—দেশের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষায় পাকিস্তানের প্রতিশ্রুতি অটুট।” The Express Tribune
পাকিস্তানের দাবি অনুযায়ী, ভূপাতিত ছয়টি যুদ্ধবিমানের মধ্যে রয়েছে তিনটি রাফাল, একটি মিগ-২৯, একটি এসইউ-৩০ এবং একটি মিরাজ ২০০০।
ভারতীয় পক্ষ থেকে এই দাবির বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে, ভারতীয় বিমান বাহিনীর প্রধান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “যুদ্ধে ক্ষয়ক্ষতি একটি স্বাভাবিক বিষয়।”
এই সামরিক উত্তেজনার পটভূমিতে রয়েছে ৬ মে ভারতের “অপারেশন সিন্ধুর” নামে একটি সামরিক অভিযান, যেখানে ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানে অবস্থিত নয়টি স্থানে হামলা চালায়। ভারতের দাবি, এই অভিযানটি কাশ্মীরে একটি সন্ত্রাসী হামলার প্রতিশোধ হিসেবে চালানো হয়েছে, যেখানে ২৬ জন ভারতীয় পর্যটক নিহত হন।
এই ঘটনার পরপরই পাকিস্তান পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানায় এবং দুই দেশের মধ্যে চার দিনের সামরিক সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষে উভয় পক্ষই ক্ষয়ক্ষতির দাবি করে। পরবর্তীতে, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
এই সাম্প্রতিক উত্তেজনা দক্ষিণ এশিয়ায় নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরনের সংঘর্ষ দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে যুদ্ধের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত দুই দেশের মধ্যে সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য উদ্যোগ নেওয়া, যাতে করে এই অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা যায়।