বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি গভীর হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, যদি তিনি কার্যকরভাবে কাজ করতে না পারেন, তবে এই পদে থাকার কোনো অর্থ নেই। বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে তিনি এই মন্তব্য করেন।

Source: Prothom Alo | 23 May 2025 | Pic: Collected
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সূত্র জানিয়েছে, দেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, প্রতিদিনের সড়ক অবরোধ, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্যমত্যের অভাব এবং রাষ্ট্রের বিভিন্ন স্তরে অসহযোগিতার কারণে ইউনূস তার দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না। তিনি বলেন, “সংস্কারের বিষয়ে এখনো তেমন কিছু হলো না। তাহলে আমি কেন থাকব?”
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সন্ধ্যায় ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, ইউনূস “পদত্যাগের বিষয়ে ভাবছেন”। নাহিদ আরও জানান, ইউনূস বলেছেন, “আমি যদি কাজ করতে না পারি… যে জায়গা থেকে তোমরা আমাকে আনছিলে একটা গণ–অভ্যুত্থানের পর। দেশের পরিবর্তন, সংস্কার…। কিন্তু যেই পরিস্থিতি যেভাবে আন্দোলন বা যেভাবে আমাকে জিম্মি করা হচ্ছে। আমি তো এভাবে কাজ করতে পারব না।”
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ইউনূস আরও বলেন, “তোমরা যেন আরেকটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করো। কারণ, আমি চলে যেতে চাই।” তিনি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন হলে ব্যালট ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ঘটলে পুলিশ–প্রশাসন তা ঠেকাতে পারবে কি না, সে বিষয়ে সংশয় রয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “ভালো নির্বাচন করতে না পারলে মানুষ আমাকে দায়ী করবে।”
বৈঠকে ইউনূস জাতির উদ্দেশে ভাষণের মাধ্যমে বিভিন্ন পক্ষের অসহযোগিতার বিষয়টি তুলে ধরার প্রস্তাব দেন। একটি ভাষণের খসড়াও তৈরি করা হয়, তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
নাহিদ ইসলাম ইউনূসকে পদত্যাগ না করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, “আমাদের গণ–অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও দেশের ভবিষ্যৎ—সবকিছু মিলিয়ে উনি যাতে শক্ত থাকেন এবং সব কটি দলকে নিয়ে যাতে ঐক্যের জায়গায় থাকেন। সবাই তাঁর সঙ্গে আশা করি কো–অপারেট করবেন।”
এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ইউনূসের পদত্যাগের সম্ভাবনা দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।