বাংলাদেশ–ভারত সীমান্তবর্তী উত্তর-পূর্ব ভারতের মণিপুরে গতকাল রাত থেকেই ফের বিশৃঙ্খলা ছড়িয়েছে। মেইতেই গোষ্ঠীর “আরামবাই তেংগোল” নেতা ও সহকর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ব্যাপক বিক্ষোভ–সংঘর্ষ শুরু হয় ইম্ফলসহ অন্যান্য জেলার—পুলিশের গুলি, রাস্তা বন্ধ, হেঁচড়া অবস্থা। অন্যতম ভয়াবহ প্রতিক্রিয়ায় কয়েকজন বিক্ষোভকারী দুর্বৃত্ততায় নিজেকে পেট্রোল ঢেলে আত্মহত্যার হুমকি দেন ।

Source: Ittefaq | 8 June 2025 | Pic: Collected
বিষ্ণুপুর জেলায় কারফিউ ঘোষণা করা হয়েছে; ইম্ফল পূর্ব, পশ্চিম, থৌবল, কাকচিঙ সহ পাঁচ জেলা–তে পাঁচ বা তার বেশি জনের জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে । ইন্টারনেট ও মোবাইল ডেটা পরিষেবা পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়েছে আগামী পাঁচ দিনের জন্য—তার মধ্যে ভিএসএটি, ভিপিএন সার্ভিসও রয়েছে
গ্রেপ্তারের পরই মেইতেই গোষ্ঠী পুলিশ পোস্টে হামলা, রাস্তা অবরোধ ও গুলির ঘটনা ঘটে । ভিডিওতে দেখা যায়, একদল যুবক পেট্রোল ঢেলে আত্মদাহের হুমকি দিচ্ছে—এই এক নাটকীয় প্রতিক্রিয়া সমাজে ভয় ও উত্তেজনা ছড়িয়েছে । পুলিশের দাবি, “ধস্তাধস্তিতে দুই সাংবাদিকসহ তিনজন আহত হয়েছেন”; পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়েছে
কমিশনার ও স্বরাষ্ট্র সচিব জানাচ্ছেন—“উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে জনগণের আবেগ উস্কে দেওয়া হচ্ছে”, তাই কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন । ২০১৯–২৫ সাল থেকে মেইতেই ও কুকি সম্প্রদায়ের দীর্ঘসময়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে—জনগণের বসতি, জমি এবং সরকারি চাকরির নিয়ে সংঘাতের পটভূমি রয়েছে । আটকে পড়া বা অনুগ্রহণমূলক তথ্য ছড়ানোর মাধ্যমে সহিংসতা বারিয়ে দেওয়ার আশঙ্কায় ইন্টারনেট নিষিদ্ধ করা হয়েছে । ইন্টারনেট বন্ধে গণআন্দোলনের সহোদরতা ক্ষুণ্ণ হলেও, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে সহজেই বৈরিতা গড়ে ওঠার আশঙ্কা রয়েছে । স্থানীয় সাংবাদিক ও মানবাধিকার সংগঠন বলছে—গ্রেপ্তার ও সংঘর্ষের বিষয়গুলো নিয়ে স্বচ্ছ তদন্ত ও মানবিক হেফাজতের দাবি রয়েছে ।
মণিপুরে এই মর্মান্তিক পরিস্থিতি—করোনা পরবর্তী সময়ে গৃহীত সাবলীল পদক্ষেপের অভাব, দীর্ঘ দিনের সামাজিক–প্রান্তিক দ্বন্দ্ব, ও প্রশাসনিক দ্বিমুখী চাপ—সবই মিশে এক জটিল ধাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ যেমন জরুরি, তেমনি বিক্ষোভকারীদের দাবির প্রতি সংবেদনশীলতার প্রয়োজন; শান্তিপূর্ণ আলোচনার পথ বেছে নাঃ এটা এখন সময়ের দাবি।
চার পাশে সামাজিক যোগাযোগ বন্ধ, কারফিউয়ের আওতায় জনজীবন আজ থমকে আছে—মানুষের শোনার অধিকার কীভাবে পূরণ হবে? মণিপুর শান্ত হবে? আর কত দিন অবরোধ, নিষেধাজ্ঞা, উত্তেজনা? একদিকে পুলিশের আন্তরিকতা; অন্যদিকে রাজনৈতিক ও সামাজিক আলোচনার উদ্দীপনা—মণিপুর দাড়িয়ে রয়েছে এই সংকটের মুখে।