বলিউডের রূপালি পর্দার মতোই এবার বাস্তব জীবনেও দেখা মিলেছে সিনেমার মতো নাটকীয়তা! প্রয়াত সঞ্জয় কাপুরের মৃত্যু নিয়ে সামনে এসেছে বিস্ফোরক দাবি। অভিনেত্রী কারিশমা কাপুরের সাবেক স্বামী এবং বিলিয়ন ডলারের প্রতিষ্ঠান ‘সোনা গ্রুপ’-এর কর্ণধার সঞ্জয় কাপুরের মৃত্যুকে ‘পরিকল্পিত হত্যা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন তার মা রানি কাপুর। তিনি সম্প্রতি ব্রিটিশ পুলিশকে একটি চিঠি দিয়ে তার ছেলের মৃত্যুর পেছনে বহু দেশের ব্যক্তি জড়িত একটি ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছেন।
রানি কাপুরের ভাষ্যমতে, তার কাছে এমন একাধিক নথি ও প্রমাণ রয়েছে যেগুলো স্পষ্ট করে জানায়, সঞ্জয়ের মৃত্যু স্বাভাবিক বা দুর্ঘটনাজনিত নয়। বরং এর পেছনে খুন, জালিয়াতি, অর্থনৈতিক প্রতারণা, সম্পত্তি দখলের চক্রান্ত এবং ভুয়া আইনি দলিলপত্র ব্যবহার করে প্রতারণার গভীর ষড়যন্ত্র লুকিয়ে রয়েছে। তিনি দাবি করেন, মৃত্যুর আগে সঞ্জয়ের বেশ কিছু সম্পদ সন্দেহজনকভাবে অন্যের নামে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং এসব কর্মকাণ্ডে লাভবান হয়েছে এমন কয়েকজন ব্যক্তির যোগসাজশ রয়েছে।
এই নাটকীয় অভিযোগ সামনে আসার পেছনে অন্যতম কারণ ছিল সোনা কমস্টারের বার্ষিক সাধারণ সভা স্থগিত করার দাবিতে পাঠানো একটি ই-মেইল। সেখান থেকেই পারিবারিক কলহ ও কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয়। এরপর রানি কাপুরের বিস্ফোরক অভিযোগে বিষয়টি আরও ঘনীভূত হয়ে ওঠে।
রানি কাপুর স্পষ্টভাবে জানান, ‘এই মৃত্যু কেবল দুর্ঘটনা নয়, এটি বহু-জাতীয় ব্যক্তিদের জড়িত একটি গভীর ষড়যন্ত্র। এতে ব্রিটেন, ভারত এমনকি সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রের কিছু ব্যক্তি যুক্ত।’ তিনি ব্রিটিশ পুলিশের কাছে ফৌজদারি তদন্ত শুরুর আবেদন জানিয়ে বলেন, “আমি এই মৃত্যুর ন্যায্য তদন্ত এবং আমার ছেলের জন্য ন্যায়বিচার চাই।”
প্রসঙ্গত, ৫৩ বছর বয়সী সঞ্জয় কাপুর গত ১২ জুন লন্ডনে পোলো খেলতে গিয়ে আকস্মিকভাবে মৃত্যুবরণ করেন। তার মুখে একটি মৌমাছি ঢুকে যাওয়ায় অ্যানাফিল্যাকটিক শক হয়ে মৃত্যু হয় বলে জানানো হয়, এবং মৃত্যুর কারণ হিসেবে হৃদরোগ উল্লেখ করা হয়। তবে রানি কাপুরের অভিযোগের পর সেটিকে ঘিরে তৈরি হয়েছে রহস্য।
সঞ্জয় কাপুর একজন মার্কিন নাগরিক হওয়ায় বিষয়টি এখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। যদিও এখনও পর্যন্ত তার স্ত্রী প্রিয়া সচদেব কাপুর এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।
এই ঘটনাটি শুধু একটি উচ্চবিত্ত পরিবারের অভ্যন্তরীণ কলহ নয়, বরং বলিউড থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক ব্যবসা ও আইন পর্যন্ত বিস্তৃত একটি চাঞ্চল্যকর অধ্যায়ের সূচনা করেছে।