যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা ১২টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, যার মধ্যে ইরান অন্যতম। যদিও ক্রীড়াবিদ, কোচ এবং সংশ্লিষ্ট স্টাফদের জন্য ব্যতিক্রম রাখা হয়েছে, সাধারণ সমর্থকরা এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছেন, ফলে তারা যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ম্যাচগুলো সরাসরি উপভোগ করতে পারবেন না ।

Source: The Athletic | 5 June 2025 | Pic: Collected
ইরানি সমর্থকরা এই সিদ্ধান্তে গভীর হতাশা প্রকাশ করেছেন। তেহরানের বাসিন্দা সোহরাব নাদেরি বলেন, “এটি আমাদের জীবনের একবারের সুযোগ ছিল, যা এখন রাজনীতির কারণে হাতছাড়া হলো।” ১৬ বছর বয়সী হাসতি তেইমোরপুর বলেন, “আমরা আমাদের দলকে সমর্থন করার সমান সুযোগের দাবিদার, যেমন অন্য দেশের সমর্থকরা পায়” ।
এই নিষেধাজ্ঞা শুধুমাত্র ইরান নয়, আফগানিস্তান, মিয়ানমার, চাদ, কঙ্গো, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান এবং ইয়েমেনের নাগরিকদেরও যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বাধা দেবে। আংশিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে আরও সাতটি দেশের ওপর, যার মধ্যে রয়েছে বুরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিওন, টোগো, তুর্কমেনিস্তান এবং ভেনেজুয়েলা ।
বিশ্বকাপের মতো বৈশ্বিক ইভেন্টে সমর্থকদের অংশগ্রহণের সুযোগ না থাকা ক্রীড়া ও সংস্কৃতির আদান-প্রদানে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সমর্থকরা তাদের দলকে সমর্থন করতে আসেন, যা একটি বৈচিত্র্যময় ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ তৈরি করে। এই নিষেধাজ্ঞা সেই পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
ফিফা এই বিষয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি। তবে, ক্রীড়া বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই নিষেধাজ্ঞা বিশ্বকাপের আয়োজন ও অংশগ্রহণে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। বিশ্বকাপের মূল উদ্দেশ্য হলো বিভিন্ন জাতি ও সংস্কৃতির মধ্যে সংযোগ স্থাপন, যা এই ধরনের নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
এই পরিস্থিতি বিশ্বকাপের আয়োজনকারী দেশগুলোর জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদেরকে নিশ্চিত করতে হবে যে, ক্রীড়া ইভেন্টগুলোতে অংশগ্রহণের সুযোগ সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে এবং রাজনৈতিক সিদ্ধান্তগুলো সেই সুযোগকে সীমিত করবে না।
বিশ্বকাপের মতো ইভেন্টে সমর্থকদের উপস্থিতি কেবল খেলার মাঠেই নয়, বরং অর্থনীতি, পর্যটন এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়েও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই নিষেধাজ্ঞা সেই সব দিকেই প্রভাব ফেলতে পারে, যা আয়োজক দেশগুলোর জন্য বিবেচনার বিষয়।
সর্বোপরি, এই নিষেধাজ্ঞা ক্রীড়া ও রাজনীতির সংযোগ নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু করেছে। বিশ্বকাপের মতো ইভেন্টে সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।