back to top

ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য উত্তেজনা: ‘ল্যান্ডলকড’ মন্তব্যের পর ভারত রপ্তানি সীমিত করল!

কূটনৈতিক অঙ্গনে নতুন উত্তেজনার জন্ম দিয়েছে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সাম্প্রতিক বক্তব্য-বিনিময়। ভারতের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বাংলাদেশকে “ল্যান্ডলকড দেশ” বলে অভিহিত করার পর দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক এখন চাপে পড়েছে। ভারত কিছু নির্দিষ্ট বাংলাদেশি পণ্যের আমদানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে—যা নিয়ে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে তুমুল আলোচনা।

Source: Economic Time| 19 May 2025 | Pic: Collected


সম্প্রতি ভারতের এক ঊর্ধ্বতন কূটনৈতিক কর্মকর্তা এক আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশকে “ল্যান্ডলকড”—অর্থাৎ চারদিকে স্থলবেষ্টিত দেশ—হিসেবে উল্লেখ করেন। অথচ ভূগোল অনুযায়ী বাংলাদেশ সাগর-সুবিধাপ্রাপ্ত একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। এই মন্তব্য বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও নাগরিক সমাজে ক্ষোভের সৃষ্টি করে।

এর প্রতিক্রিয়ায় ভারত কিছু বাংলাদেশি আমদানি পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়ায় ও শুল্ক ছাড় সুবিধা স্থগিত রাখে। অনেকে বলছেন, এটি সরাসরি কূটনৈতিক চাপে ফেলতে একটি “অপ্রচলিত কৌশল”।

ঢাকা সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত ও তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, “বাংলাদেশ স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র, যার সমুদ্রবন্দর রয়েছে। ল্যান্ডলকড শব্দটি অবমাননাকর এবং ঐতিহাসিক বাস্তবতা অস্বীকারের সামিল।”

এ ছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আশঙ্কা প্রকাশ করে যে, ভারতের নতুন সিদ্ধান্তে কিছু গুরুত্বপূর্ণ খাত—বিশেষ করে পোশাক, ওষুধ ও চামড়া রপ্তানি—ক্ষতির মুখে পড়তে পারে

ভারত বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার। প্রতিবছর প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হয় দু’দেশের মধ্যে। ভারত থেকে বাংলাদেশ পায় নানা কাঁচামাল ও ভোগ্যপণ্য। অন্যদিকে বাংলাদেশ ভারতকে রপ্তানি করে তৈরি পোশাক, চামড়াজাত পণ্য, ওষুধ, প্লাস্টিক ও কৃষিপণ্য।

বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরণের প্রতিক্রিয়া আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও বাণিজ্যিক আস্থা হ্রাস করতে পারে।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশের ব্যবসায়ী ও রপ্তানিকারকদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। চট্টগ্রাম ও বেনাপোল বন্দর ব্যবহারকারী রপ্তানিকারকরা বলছেন, “ভারতের হঠাৎ সিদ্ধান্ত আমাদের আগাম পরিকল্পনায় ধাক্কা দিচ্ছে।”

অন্যদিকে আন্তর্জাতিক কূটনীতিক মহল মনে করছে, বাংলাদেশ-ভারতের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এই ঘটনায় কিছুটা হলেও সংকটে পড়েছে।

এই সংকটের দ্রুত সমাধান প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কূটনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে বিষয়টি নিয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের। সবার প্রত্যাশা—উভয় দেশই সংযত ভাষা ও নীতি গ্রহণ করবে, যাতে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতা অক্ষুণ্ণ থাকে।

- Advertisement -spot_img
Related News
- Advertisement -spot_img
Explore More
- Advertisement -spot_img