যুক্তরাষ্ট্রের স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের উপর ২৫% শুল্কের জবাবে ভারতের পাল্টা পদক্ষেপ
ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্যিক উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম পণ্যের উপর ২৫% শুল্ক আরোপের জবাবে, ভারত বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (WTO)-তে দাখিল করা এক নথিতে জানিয়েছে যে, তারা যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা নির্দিষ্ট পণ্যের উপর পাল্টা শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ভারতীয় রপ্তানিকারকদের ক্ষতি পূরণ এবং বাণিজ্য ভারসাম্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্য রয়েছে।

Source: Reuters | 13 May 2025 | Pic: Collected
প্রধান তথ্যসমূহ:
- শুল্ক আরোপের প্রেক্ষাপট: ২০২৫ সালের মার্চে, যুক্তরাষ্ট্র স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম পণ্যের উপর ২৫% শুল্ক আরোপ করে, যা ২০১৮ সালে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম দফা শুল্কের সম্প্রসারণ।
- ভারতের প্রতিক্রিয়া: ভারত WTO-তে দাখিল করা নথিতে জানিয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্কের ফলে প্রায় $৭.৬ বিলিয়ন মূল্যের ভারতীয় রপ্তানি প্রভাবিত হয়েছে। এই ক্ষতি পূরণে, ভারত যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা নির্দিষ্ট পণ্যের উপর শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছে।
- রপ্তানিকারকদের উদ্বেগ: ভারতের ছোট ও মাঝারি মাপের রপ্তানিকারকরা, বিশেষ করে ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্যের রপ্তানিকারকরা, এই শুল্কের ফলে অর্ডার হ্রাস এবং খরচ বৃদ্ধির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তারা সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা কিছু পণ্যের উপর শুল্ক হ্রাসের আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আরও অনুকূল বাণিজ্যিক শর্ত অর্জন করা যায়।
- বাণিজ্য আলোচনা: ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে বাণিজ্য আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন, যেখানে এই শুল্ক এবং সম্ভাব্য পাল্টা শুল্ক নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
এই বাণিজ্য দ্বন্দ্বের ফলে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরাও প্রভাবিত হতে পারেন। বিশেষ করে, যারা ভারতীয় কাঁচামাল ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি করেন, তাদের জন্য এই শুল্ক নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়া, বাংলাদেশের ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম শিল্পের উপরও এই শুল্কের প্রভাব পড়তে পারে, কারণ ভারতীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেলে বিকল্প সরবরাহকারীদের সন্ধান করতে হতে পারে।
ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্যিক উত্তেজনা বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। এই পরিস্থিতি কেবল দুই দেশের জন্য নয়, বরং তাদের বাণিজ্যিক অংশীদারদের জন্যও নতুন চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। বাংলাদেশের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্য এই পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা জরুরি, যাতে তারা তাদের বাণিজ্য নীতিতে প্রয়োজনীয় সমন্বয় করতে পারে।