বাংলাদেশের রাজনীতিতে আবারও উত্তাল বিতর্ক—রাজাকারদের বেকসুর খালাস উদযাপন করে ভোট চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই ইস্যুতে সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি এবং সাধারণ জনগণ এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

Source: Ittefaq | 29 May 2025 | Pic: Collected
সম্প্রতি, যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত রাজাকারদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় আদালত বেকসুর খালাস প্রদান করেছেন। এই রায়ে অনেকেই বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ। বিচার বিভাগের এই সিদ্ধান্তকে অনেকেই প্রশ্নবিদ্ধ মনে করছেন, যেখানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও শহীদদের আত্মত্যাগের অবমূল্যায়ন হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, রাজাকারদের খালাস উদযাপন করে ভোট চাওয়া হচ্ছে, যা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী। তারা দাবি করছেন, এই ধরনের কর্মকাণ্ড দেশের ইতিহাস ও শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি চরম অবমাননা। অন্যদিকে, ক্ষমতাসীন দল এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, বিচার বিভাগ স্বাধীন এবং তাদের সিদ্ধান্তে সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ নেই।
বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন, যেমন বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন, জাতীয় কবিতা পরিষদ, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ প্রমুখ, এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তারা বলেছে, রাজাকারদের খালাস উদযাপন করে ভোট চাওয়া মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে। এছাড়া, সাধারণ জনগণও সামাজিক মাধ্যমে এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীরা ‘আমরা সবাই রাজাকার’ স্লোগান দেয়, যা ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি করে। এই স্লোগানকে অনেকেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি অবমাননা হিসেবে দেখেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘নিজেদের রাজাকার বলতে তাদের লজ্জা হয় না।’
রাজাকারদের খালাস উদযাপন করে ভোট চাওয়ার অভিযোগ দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে গভীর প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এটি কি ইতিহাসের প্রতি অসম্মান, নাকি রাজনৈতিক কৌশল? জনগণ এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে।
এই ঘটনায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, শহীদদের আত্মত্যাগ এবং দেশের ইতিহাসের প্রতি সম্মান বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক স্বার্থে ইতিহাসকে ব্যবহার না করে, দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সঠিক ও গৌরবময় ইতিহাস উপস্থাপন করা আমাদের সকলের দায়িত্ব।