বাংলাদেশ–মিয়ানমার সীমান্তে নতুন উত্তেজনার ইঙ্গিত দিচ্ছে রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর অস্ত্র সংগ্রহ ও প্রস্তুতি। আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের (ICG) ‘বাংলাদেশ–মিয়ানমার: রোহিঙ্গা বিদ্রোহের ঝুঁকি’ শীর্ষক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে তীব্রভাবে সদস্য সংগ্রহ করছে এসব গোষ্ঠী ।

Source: BBC Bangla | 19 June 2025 | Pic: Collected
প্রতিবেদন অনুসারে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু বৌদ্ধদের সমর্থন নিয়ে আরাকান আর্মির সামরিক অগ্রযাত্রার মুখে রোহিঙ্গা সংগঠনগুলো গত নভেম্বরে একজোট হয়ে প্রতিরোধ প্রস্তুতি নিচ্ছে। কক্সবাজার শিবির থেকেই গোষ্ঠীগুলো সদস্য সংগ্রহ করছে—এই তথ্য দেশ রূপান্তরও নিশ্চিত করেছে ।
ICG জানাচ্ছে, রোহিঙ্গা সশস্ত্রতাপ্রবণতার ফলে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সাম্প্রদায়িক ভারসাম্য নড়বড়ে হতে পারে, পাশাপাশি বাংলাদেশের রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াও সংকটাপন্ন হয়ে উঠতে পারে । আরাকান আর্মি ও রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো অস্থিতিশীল হয়ে পড়ার আশঙ্কাও উত্থাপন করেছে প্রতিবেদনে।
এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে নিরাপত্তা জোরদার করার পাশাপাশি আরাকান আর্মির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক আলোচনার পথ খুঁজছে । প্রতিবেদনে এই পরামর্শও এসেছে যে, রোহিঙ্গা শিবিরে সশস্ত্র কার্যক্রম প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক সহায়তা, বাণিজ্য সম্প্রসারণ, এবং স্থানীয় যোগাযোগ জরুরি।
এছাড়া, ICG বিশ্লেষকরা বলছেন—যদি রোহিঙ্গারা সশস্ত্র আন্দোলনের পথে হাঁটেন, তাতে মিয়ানমারের দিকে তাদের প্রতি জনজাতিক মনোভাব নেতিবাচকভাবে পরিবর্তিত হতে পারে। এটি মানে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও নিরাপত্তা পরিকল্পনাও বিপদের মুখে পড়তে পারে ।
রিপোর্টি আরও উল্লেখ করে, “শরণার্থী শিবির থেকে সদস্য সংগ্রহ প্রক্রিয়া তীব্র হচ্ছে; ধর্মীয় আবেগকে কাজে লাগানো হচ্ছে”। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে এই সংকট মোকাবেলায় তৎপরতা দরকার।
রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে যুদ্ধের গোপন পরিকল্পনা—শুধুমাত্র সামরিক দ্বন্দ্ব নয়, এটি বাংলাদেশের সীমান্ত নিরাপত্তা ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ভবিষ্যতকেও প্রভাবিত করবে। জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও মানবাধিকার সংগঠনদের মধ্যে জরুরি সহযোগিতা এবং শরণার্থী জীবনের সুরক্ষায় বাংলাদেশ সরকারের সচেতন ভূমিকা আজও চাই।