হলিউডের প্রভাবশালী চলচ্চিত্র নির্মাতা ও অভিনেতা টাইলার পেরির বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি, লিঙ্গভিত্তিক কর্মস্থল সহিংসতা এবং যৌন নিপীড়নের গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে। গত সপ্তাহে লস অ্যাঞ্জেলেসে দায়ের করা একটি মামলায় অভিনেতা ডেরেক ডিকসন দাবি করেছেন, পেরি তাঁর ক্ষমতা ও প্রভাব ব্যবহার করে একটি “বাধ্যতামূলক, যৌন শোষণমূলক পরিবেশ” তৈরি করেছিলেন এবং পেশাগত উন্নতির প্রতিশ্রুতি দিয়ে বছরের পর বছর ধরে তাঁকে যৌন নিপীড়নের শিকার করেন।

Source: The Guardian | 18 June 2025 | Pic: Collected
ডিকসন জানিয়েছেন, টাইলার পেরির টিভি সিরিজ “Ruthless” এবং “The Oval”-এ কাজ করার সময় তিনি একাধিকবার হয়রানি ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন। অভিযোগে বলা হয়েছে, পেরি তাঁর চাকরি, পারিশ্রমিক এবং সৃষ্টিশীল সুযোগ-সুবিধাগুলোর ওপর সরাসরি নিয়ন্ত্রণ রেখে এসব ঘটনার সুযোগ নেন। অভিযোগকারীর দাবি, পেরির অনৈতিক প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় তাঁকে বিভিন্নভাবে পেশাগতভাবে হেনস্তা ও প্রতিশোধমূলক আচরণের সম্মুখীন হতে হয়।
মামলায় আরও বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে পেরির স্টুডিও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রথম তাঁদের দেখা হয়। সেখানেই পেরি ডিকসনকে আলাদা করে প্রশ্ন করতে থাকেন— তিনি কি অভিনয় করেন বা আগ্রহী কি না। এর পরপরই পেরি ব্যক্তিগতভাবে তার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন এবং একটি ছোট চরিত্রে কাজের সুযোগ দেন, যা পরে বড় কিছুতে রূপ নিতে পারে বলে আশ্বাস দেন।
এক পর্যায়ে, পেরি ডিকসনকে নিজের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানান। সেখানে এক রাতে, অতিথি কক্ষে ঘুমাতে যাওয়ার পর, ডিকসনের দাবি অনুযায়ী, হঠাৎ তিনি বুঝতে পারেন যে কেউ তার পাশে এসে শুয়ে তার উরুতে স্পর্শ করছে। অভিযোগে আরও বলা হয়, একাধিকবার পেরি তাকে যৌনভাবে আক্রমণ করেছেন, এমনকি একবার জোর করে পোশাক খুলে ফেলেন এবং পেছন থেকে গোপনাঙ্গে স্পর্শ করেন।
মামলায় টেক্সট বার্তা ও অন্যান্য যোগাযোগের প্রমাণও সংযুক্ত করা হয়েছে, যেখানে পেরির পক্ষ থেকে প্রলোভনমূলক ও যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তার উল্লেখ রয়েছে। ডিকসন জানিয়েছেন, তিনি এসব এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও পেরি তা উপেক্ষা করেন।
পেরির আইনজীবী ম্যাথিউ বয়েড অভিযোগটিকে ভিত্তিহীন ও “একটি অর্থ আদায়ের অপচেষ্টা” হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, “এই ব্যক্তি পেরির কাছাকাছি এসেছিলেন কেবল একটি প্রতারণামূলক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে।”
মামলায় বলা হয়েছে, টাইলার পেরির বিরুদ্ধে “ঝুঁকিপূর্ণ ও প্রভাবাধীন পুরুষ কর্মীদের যৌনভাবে শোষণ করার প্যাটার্ন রয়েছে।” পেরির নামকে হার্ভি ওয়াইনস্টিন, আর. কেলি, এবং বিল কসবির মতো কুখ্যাতদের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।
ডেরেক ডিকসন মামলায় ২৬০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন। মামলাটি বর্তমানে লস অ্যাঞ্জেলেস সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন।