যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে সম্প্রতি প্রস্তাবিত একটি বিল, “দ্য ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল,” প্রবাসীদের জন্য নতুন আর্থিক চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। এই বিল অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত নন-সিটিজেনরা—যেমন H-1B ভিসাধারী ও গ্রিন কার্ড হোল্ডাররা—যদি বিদেশে অর্থ পাঠান, তবে সেই রেমিট্যান্সের উপর ৫% কর আরোপ করা হবে।

Source: The Economic Times | 18 May 2025 | Pic: Collected
এই প্রস্তাবিত করের ফলে ভারতীয় ও বাংলাদেশি প্রবাসীদের উপর উল্লেখযোগ্য আর্থিক চাপ সৃষ্টি হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতে প্রবাসীরা প্রায় ৩২ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছেন। এই কর কার্যকর হলে, ভারতীয় প্রবাসীদের বছরে প্রায় ১.৬ বিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত কর দিতে হতে পারে।
বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ লাখ বাংলাদেশি প্রবাসী রয়েছেন, যারা নিয়মিতভাবে দেশে অর্থ পাঠান। এই কর আরোপের ফলে তাদের প্রেরিত অর্থের পরিমাণ কমে যেতে পারে, যা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, এই করের ফলে প্রবাসীরা অনানুষ্ঠানিক চ্যানেলের মাধ্যমে অর্থ পাঠাতে উৎসাহিত হতে পারেন, যা অর্থ পাচার ও নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
বিলটি বর্তমানে কংগ্রেসে আলোচনাধীন এবং মে মাসে ভোটাভুটির সম্ভাবনা রয়েছে। যদি এটি পাস হয়, তবে জুন বা জুলাই মাসে এটি কার্যকর হতে পারে। এই প্রেক্ষাপটে, প্রবাসীদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে যে, তারা যদি বড় অঙ্কের অর্থ পাঠানোর পরিকল্পনা করে থাকেন, তবে তা বিল কার্যকর হওয়ার আগেই সম্পন্ন করা উচিত।
এই প্রস্তাবিত করের বিরুদ্ধে প্রবাসী সংগঠনগুলো ইতিমধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং বিলটি বাতিলের জন্য প্রচারণা শুরু করেছে। তারা যুক্তি দিচ্ছেন যে, এই কর প্রবাসীদের উপর অতিরিক্ত আর্থিক চাপ সৃষ্টি করবে এবং তাদের পরিবারের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
বাংলাদেশ সরকারও এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছে।
এই পরিস্থিতিতে, প্রবাসীদের সচেতন থাকা এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা যেন আইনগতভাবে সঠিক চ্যানেলের মাধ্যমে অর্থ পাঠান এবং সম্ভাব্য করের প্রভাব সম্পর্কে অবগত থাকেন।
এই প্রস্তাবিত করের বিষয়ে আরও তথ্য ও আপডেটের জন্য প্রবাসীরা স্থানীয় কনস্যুলেট অফিস বা প্রবাসী সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।