চাঁদে যাওয়ার মতো স্বপ্ন, কিন্তু পৃথিবীর মাটিতে”—এভাবেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য উদ্যোগ ‘Cancer Moonshot’-এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য একটাই—২০২০ সালের তুলনায় আগামী ২৫ বছরের মধ্যে ক্যানসার মৃত্যুর হার অর্ধেকে নামিয়ে আনা এবং এই প্রাণঘাতী রোগের বিরুদ্ধে যুদ্ধকে এক নতুন মাত্রায় নিয়ে যাওয়া।

Source: Axios| 19 May 2025 | Pic: Collected
মূল লক্ষ্য কী?
‘Cancer Moonshot’ হলো একটি উচ্চাভিলাষী ফেডারেল প্রকল্প, যার লক্ষ্য হল:
- ক্যানসার গবেষণায় অর্থায়ন বাড়ানো
- উন্নত স্ক্রিনিং প্রযুক্তি ও ডায়াগনস্টিক্সের প্রসার
- রুগীদের সহজ, সাশ্রয়ী ও সমতা ভিত্তিক চিকিৎসা পৌঁছে দেওয়া
- রোগী এবং চিকিৎসকের মধ্যে তথ্য বিনিময় সহজতর করা
এই উদ্যোগের মাধ্যমে বাইডেন প্রশাসন কেবল প্রযুক্তিগত উন্নয়নের দিকেই নজর দিচ্ছে না, বরং সাধারণ মানুষের কাছে বাঁচার অধিকারকে বাস্তবায়নের চেষ্টাও করছে।
ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে জাতীয় পরিকল্পনা
জো বাইডেনের জন্য এই লড়াই শুধু রাষ্ট্রপতির পদ থেকে নয়, একজন পিতার ভূমিকাতেও। ২০১৫ সালে তার ছেলে বো বাইডেন ব্রেন ক্যানসারে মারা যান। সেই ব্যক্তিগত শোককেই বাইডেন একটি জাতীয় লক্ষ্যে পরিণত করেছেন। এই মানবিক প্রেক্ষাপটই ‘Cancer Moonshot’ কে আরও হৃদয়ছোঁয়া ও বিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছে।
ক্যানসার গবেষণায় নতুন যুগ
এই প্রকল্পে মূল গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে উদ্ভাবনী গবেষণার উপর। জিন সম্পাদনা (gene editing), নতুন ইমিউনোথেরাপি, এবং AI ভিত্তিক ডায়াগনস্টিক সিস্টেম এর মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করে আরও নির্ভুল এবং দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
এছাড়া বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে এমন জনগোষ্ঠী যারা ঐতিহাসিকভাবে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত—বিশেষ করে কৃষ্ণাঙ্গ, লাতিনো এবং গ্রামীণ জনপদের মানুষদের জন্য।
ভারতের জন্য কী বার্তা?
ভারতেও ক্যানসার একটি বাড়ন্ত সংকট। বাইডেনের ‘Cancer Moonshot’ একটি গ্লোবাল অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করতে পারে। উন্নয়নশীল দেশগুলো এই প্রকল্প থেকে শিক্ষা নিয়ে তাদের নিজস্ব নীতিতে পরিবর্তন আনতে পারে, বিশেষ করে প্রাথমিক স্ক্রিনিং এবং চিকিৎসা সহজলভ্য করার ক্ষেত্রে।
জো বাইডেনের ‘Cancer Moonshot’ শুধুই একটি বিজ্ঞানভিত্তিক স্বাস্থ্য প্রকল্প নয়—এটি এক মানবিক উদ্যোগ। এটি প্রমাণ করে, রাষ্ট্রনেতার সহানুভূতি, রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবনের মেলবন্ধনে ক্যানসারের মতো শত্রুকেও হার মানানো সম্ভব।
এই প্রকল্প যদি সফল হয়, তবে একে বলা যেতে পারে—একবিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানবকল্যাণমুখী উদ্যোগ।