যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ রায়ে ট্রাম্প প্রশাসনকে ভেনেজুয়েলান অভিবাসীদের জন্য প্রদত্ত অস্থায়ী সুরক্ষা (Temporary Protected Status – TPS) বাতিল করার অনুমতি দিয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রায় ৩.৫ লাখ ভেনেজুয়েলান অভিবাসী তাদের বৈধতা ও কর্মসংস্থানের অধিকার হারাতে পারেন।

Source: CNN | 20 May 2025 | Pic: Collected
TPS প্রোগ্রামটি মূলত যুদ্ধ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে নিজ দেশে ফিরে যেতে অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে অস্থায়ী সুরক্ষা প্রদান করে। বাইডেন প্রশাসন ২০২১ ও ২০২৩ সালে ভেনেজুয়েলান নাগরিকদের জন্য এই সুরক্ষা প্রদান করেছিল, যা ২০২৬ সালের অক্টোবর পর্যন্ত কার্যকর থাকার কথা ছিল। কিন্তু ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্প প্রশাসনের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোম এই সুরক্ষা বাতিলের ঘোষণা দেন, যা একটি ফেডারেল আদালত স্থগিত করেছিল। সুপ্রিম কোর্টের সর্বশেষ রায়ে সেই স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়া হয়েছে, ফলে প্রশাসন এখন এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে পারে।
এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অভিবাসন অধিকারকর্মীরা তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। ইউসিএলএ স্কুল অফ ল’র সেন্টার ফর ইমিগ্রেশন ল’ অ্যান্ড পলিসির সহ-পরিচালক আহিলান আরুলানান্থাম বলেন, “এটি আধুনিক মার্কিন ইতিহাসে কোনো নির্দিষ্ট অভিবাসী গোষ্ঠীর উপর সবচেয়ে বড় বৈধতা বাতিলের ঘটনা।” তিনি আরও বলেন, “এই সিদ্ধান্ত হাজার হাজার মানুষের জীবনে গভীর প্রভাব ফেলবে।”
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বিচারপতি কেটানজি ব্রাউন জ্যাকসন একমাত্র ভিন্নমত পোষণ করেন। তিনি মনে করেন, এই সিদ্ধান্ত অভিবাসীদের জন্য গুরুতর ক্ষতির কারণ হতে পারে এবং এটি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করা উচিত ছিল।
এই রায়ের ফলে অনেক ভেনেজুয়েলান অভিবাসী এখন অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন। তাদের অনেকেই যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন এবং সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখছেন। TPS বাতিলের ফলে তারা কর্মসংস্থান হারাতে পারেন এবং নিজ দেশে ফেরত যেতে বাধ্য হতে পারেন, যেখানে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা বিদ্যমান।
এই পরিস্থিতিতে অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা অভিবাসীদের আইনি পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা মনে করেন, এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়া উচিত এবং অভিবাসীদের তাদের অধিকার রক্ষায় সচেষ্ট হওয়া উচিত।
এই রায় অভিবাসন নীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় নির্দেশ করে এবং ভবিষ্যতে অভিবাসন সংক্রান্ত নীতিমালায় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। এটি অভিবাসীদের জন্য একটি সতর্কবার্তা, যারা যুক্তরাষ্ট্রে একটি নিরাপদ ও স্থিতিশীল জীবন গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেন।