back to top

যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেডিট রেটিং ডাউনগ্রেড: শেয়ারবাজারে ধস, ডলারের পতন, ইউরোপে মন্দার শঙ্কা

আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতে আবারও তীব্র আলোড়ন—যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেডিট রেটিংয়ে অবনমন ঘটার পর বিশ্বজুড়ে শেয়ারবাজারে পতন, ডলারের মান কমে যাওয়া এবং বন্ডের সুদের হার বাড়ার ঘটনা বিশ্ব অর্থনীতিকে আরও অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিয়েছে।

Source: The Guardian | 20 May 2025 | Pic: Collected

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সামর্থ্য নিয়ে শঙ্কা বাড়তেই সোমবার আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থা মুডি’স দেশটির ঋণগ্রহণের ক্ষমতা নিয়ে নেতিবাচক পূর্বাভাস দেয়। এতে বিশ্ববাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ থেকে মুখ ফিরিয়ে বন্ডের দিকে ঝুঁকে পড়েন, যার ফলে মার্কিন ট্রেজারি বন্ডের ইল্ড বা সুদের হার বেড়ে যায়।

এদিকে, মার্কিন ডলারের মান কমে গেলে তা অন্যান্য মুদ্রার তুলনায় দুর্বলতা প্রদর্শন করে, বিশেষত ইউরো ও পাউন্ডের তুলনায়। ইউরোপের বাজারগুলোতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, যেখানে একই দিনে ইউরোপীয় কমিশন (EC) ইউরোজোনভুক্ত দেশগুলোর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস হ্রাস করে দেয়। তারা জানায়, উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি ও নীতিগত অনিশ্চয়তা অঞ্চলটির অর্থনৈতিক গতি মন্থর করে ফেলেছে।

বিশ্বজুড়ে পুঁজিবাজারে এই নেতিবাচক প্রবণতা বিশেষ করে প্রযুক্তি ও ব্যাংক খাতে বেশি আঘাত হেনেছে। যুক্তরাষ্ট্রের এসঅ্যান্ডপি ৫০০ এবং ডাও জোনস ইনডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজে বড়সড় পতন লক্ষ্য করা যায়। একই অবস্থা দেখা দেয় ইউরোপ ও এশিয়ার প্রধান স্টক এক্সচেঞ্জগুলোতেও।

অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মুডি’স-এর এমন পূর্বাভাস কেবল বাজারকে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনকেও নাড়া দিয়েছে। ২০২৫ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রাক্কালে এটি বাইডেন প্রশাসনের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার ওপর চাপ বাড়িয়ে তুলবে।

অন্যদিকে, ইউরোপের প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস কমিয়ে দেয়ার মধ্য দিয়ে একটি নতুন সংকেত পাওয়া যাচ্ছে যে, ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি মোকাবিলায় ইউরোপের দেশগুলো অর্থনৈতিকভাবে আরও চাপে পড়তে যাচ্ছে।

বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্যও এই পরিস্থিতি হুমকিস্বরূপ। কারণ, বৈশ্বিক বাজারে অনিশ্চয়তা বাড়লে সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ, রেমিট্যান্স প্রবাহ ও ডলার-নির্ভর বাণিজ্যিক লেনদেনগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি হবে।

বিশ্লেষকরা এখন নজর রাখছেন মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ, ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংক (ECB) এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF)-এর প্রতিক্রিয়ার দিকে। কেউ কেউ বলছেন, বিশ্বব্যাপী আর্থিক নীতিমালায় স্থিতিশীলতা আনতে জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

- Advertisement -spot_img
Related News
- Advertisement -spot_img
Explore More
- Advertisement -spot_img