বাংলাদেশের অপরাধ জগতের এক কুখ্যাত নাম সুব্রত বাইন। ১৯৯০-এর দশকে ঢাকার মগবাজার এলাকায় তার নেতৃত্বে গড়ে ওঠে ‘সেভেন স্টার’ নামে একটি সন্ত্রাসী চক্র, যা হত্যা, চাঁদাবাজি, ভূমি দখল ও অস্ত্র চোরাচালানের মতো অপরাধে জড়িত ছিল। ১৯৯১ সালে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের ছাত্রনেতা মুরাদকে হত্যার দায়ে তিনি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন। তবে বারবার জামিনে মুক্ত হয়ে তিনি অপরাধ জগতে ফিরে আসেন

Source: Daily Amar Desh | 30 May 2025 | Pic: Collected
সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারত থেকে তাকে গোপনে বাংলাদেশে আনা হয় একটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের মিশনের জন্য। লক্ষ্য ছিল লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপি নেতা তারেক রহমানকে শুক্রবারের জুমার নামাজের সময় স্নাইপার দিয়ে হত্যা করা। এই মিশনটি ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় পরিচালিত হয়েছিল এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী মিশন শেষে সুব্রত বাইনকেও হত্যা করে প্রমাণ মুছে ফেলার কথা ছিল। তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পরিবর্তনের ফলে এই মিশনটি ভেস্তে যায়।
২০২৫ সালের ২৭ মে কুষ্টিয়ার কালিশংকরপুর এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি অভিযানে সুব্রত বাইন ও তার সহযোগী মোল্লা মাসুদ গ্রেফতার হন। তাদের কাছ থেকে পাঁচটি বিদেশি পিস্তল, ১০টি ম্যাগাজিন, ৫৩টি গুলি ও একটি স্যাটেলাইট ফোন উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারের পর সুব্রত বাইন আট দিনের রিমান্ডে রয়েছেন এবং জিজ্ঞাসাবাদে তিনি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা ও বিদেশি অর্থায়নের কথা স্বীকার করেছেন।
সুব্রত বাইন ও তার চক্রের কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় হুমকি। তাদের মাধ্যমে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড, অস্ত্র চোরাচালান ও বিদেশি অর্থায়নের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চলছে। এই পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপ ও জনগণের সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি।
সুব্রত বাইন শুধু একজন সন্ত্রাসী নয়, বরং একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশ। তার গ্রেফতার বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তবে এই ধরনের ষড়যন্ত্র প্রতিরোধে সরকারের কঠোর নজরদারি ও জনগণের সচেতনতা অপরিহার্য।