যুক্তরাজ্যের লন্ডনে তুরস্কের কনস্যুলেটের সামনে কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় হ্যামিট কোসকুন নামের এক ব্যক্তিকে আদালত দোষী সাব্যস্ত করেছে। ঘটনাটি ধর্মীয় সহিষ্ণুতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

Source: Ittefaq | 3 June 2025 | Pic: Collected
৫০ বছর বয়সী কোসকুন, যিনি তুরস্কে জন্মগ্রহণকারী কুর্দিশ-আর্মেনিয়ান বংশোদ্ভূত এবং নিজেকে নাস্তিক হিসেবে পরিচয় দেন, লন্ডনের নাইটসব্রিজ এলাকায় তুর্কি কনস্যুলেটের সামনে কোরআন পোড়ান এবং ইসলাম ধর্ম নিয়ে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করেন। আদালতে তিনি দাবি করেন, এটি ছিল তুরস্ক সরকারের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অংশ এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার।
তবে বিচারক ম্যাকগারভা এই কাজকে “অত্যন্ত উসকানিমূলক” বলে অভিহিত করেন এবং বলেন, এটি মুসলিমদের প্রতি ঘৃণা থেকে অনুপ্রাণিত। তিনি আরও বলেন, ধর্মীয় গ্রন্থ পোড়ানো সবসময় অপরাধ নয়, কিন্তু ঘটনাস্থল, সময় এবং ভাষার কারণে এটি জনশৃঙ্খলার ব্যাঘাত ঘটিয়েছে।
কোসকুনকে ২৪০ ইউরো জরিমানা করা হয়েছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩৪ হাজার টাকা। তার পক্ষে আইনি সহায়তা প্রদান করছে ন্যাশনাল সেক্যুলার সোসাইটি এবং ফ্রি স্পিচ ইউনিয়ন, যারা আদালতের রায়কে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর আঘাত হিসেবে দেখছে এবং আপিলের ঘোষণা দিয়েছে।
অন্যদিকে, মুসলিম অ্যাডভোকেসি গ্রুপ এমইএনডি বিচারকের রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অংশ নয়।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র জানান, যুক্তরাজ্যে ধর্ম অবমাননার কোনো আইন নেই এবং এমন কোনো আইন চালুর পরিকল্পনাও সরকারের নেই। তবে বিরোধীদল কনজারভেটিভ পার্টির নেত্রী কেমি বাডেনক বলেন, এই মামলায় অবশ্যই আপিল হওয়া উচিত এবং তিনি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় সোচ্চার থাকবেন।
এই ঘটনাটি যুক্তরাজ্যে ধর্মীয় সহিষ্ণুতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং ঘৃণামূলক বক্তব্যের সীমা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সমাজের সকল স্তরে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং আইনি কাঠামোর পর্যালোচনা প্রয়োজন।
এই মামলার পরবর্তী আপিলের ফলাফল এবং এর প্রভাব সমাজে দীর্ঘমেয়াদে কীভাবে প্রতিফলিত হবে, তা সময়ই বলে দেবে।
Sources