back to top

রাজনৈতিক অস্থিরতার ভেতর জনতার রায়, প্রেসিডেন্ট হলেন লি জে-মিয়ং

দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। দীর্ঘ রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিভাজনের পর, লি জে-মিয়ং দেশের ১৪তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছেন। তার এই বিজয় কেবল একটি নির্বাচনের ফল নয়, বরং গণতন্ত্রের পুনর্জাগরণ এবং জাতীয় ঐক্যের প্রতীক।

Source: bdnews24 | 4 June 2025 | Pic: Collected


লি জে-মিয়ং-এর জীবন কাহিনী এক সংগ্রামী অধ্যায়। শৈশবে দারিদ্র্য ও শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তাকে থামাতে পারেনি। কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করে তিনি জীবনের কঠিন বাস্তবতা অনুভব করেছেন। এই অভিজ্ঞতা তাকে মানবাধিকার ও শ্রমিক অধিকার রক্ষায় উদ্বুদ্ধ করে। আইনজীবী হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করে তিনি সেওংনাম শহরের মেয়র এবং গিয়ংগি প্রদেশের গভর্নর হিসেবে সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেন।

২০২৫ সালের জুনে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লি ৪৯.৪২% ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের সামরিক আইন জারির পরবর্তী রাজনৈতিক সংকটের প্রেক্ষাপটে। লি এই সংকটে গণতন্ত্রের পক্ষে সোচ্চার ভূমিকা পালন করেন, যা তার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়।

শপথ গ্রহণের পর লি তার অভিষেক ভাষণে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “গণতন্ত্রের পুনর্জাগরণ এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার আমাদের প্রধান লক্ষ্য।” তিনি উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সংলাপের প্রতিশ্রুতি দেন এবং যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের অঙ্গীকার করেন।

লি তার অভিষেক ভাষণে বৈশ্বিক বাণিজ্য অস্থিরতা এবং সাপ্লাই চেইন সংকটকে দক্ষিণ কোরিয়ার অস্তিত্বের জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “বিশ্বব্যাপী পরিবর্তন আমাদের দেশের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে, এবং আমাদের এসবের মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকতে হবে।”

লি তার প্রশাসনকে “বাস্তববাদী প্রো-মার্কেট” হিসেবে ঘোষণা করেছেন। তিনি কর্পোরেট কর বৃদ্ধি, কল্যাণ ব্যয় বৃদ্ধি এবং বড় কর্পোরেশনগুলোর উপর নিয়ন্ত্রণ বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, নবায়নযোগ্য শক্তি এবং কোরিয়ান সংস্কৃতি শিল্পে বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছেন।

লি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মজবুত সামরিক জোট বজায় রাখার পাশাপাশি চীনের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক রক্ষার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি বলেন, “আমাদের কূটনীতি হবে বাস্তববাদী এবং জাতীয় স্বার্থকেন্দ্রিক।”

লি জে-মিয়ং-এর প্রেসিডেন্সি দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য একটি নতুন সূচনা। তিনি তার অভিজ্ঞতা, দূরদর্শিতা এবং জনগণের প্রতি প্রতিশ্রুতি দিয়ে দেশকে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারেন। তবে, তার সামনে রয়েছে বহু চ্যালেঞ্জ, এবং সময়ই বলবে তিনি কতটা সফল হবেন।

- Advertisement -spot_img
Related News
- Advertisement -spot_img
Explore More
- Advertisement -spot_img