যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হত্যার হুমকি দিয়ে পাঠানো চিঠির ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া মেক্সিকান অভিবাসী রামন মোরালেস-রেয়েস আসলে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। মিলওয়াকির বাসিন্দা ডেমেট্রিক ডি. স্কট (৫২) স্বীকার করেছেন যে, তিনি নিজেই ওই চিঠিগুলো লিখে মোরালেস-রেয়েসের নামে পাঠিয়েছেন, যাতে তাকে দেশ থেকে বহিষ্কার করা যায় এবং স্কটের বিরুদ্ধে চলমান মামলায় সাক্ষ্য দেওয়া থেকে বিরত রাখা যায়।

মোরালেস-রেয়েস, যিনি একজন অনিবন্ধিত অভিবাসী এবং ২০২৩ সালে স্কটের বিরুদ্ধে দায়ের করা সশস্ত্র ডাকাতি ও গুরুতর আঘাতের মামলার প্রধান সাক্ষী, ২২ মে গ্রেপ্তার হন। চিঠিগুলোতে ট্রাম্পকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল এবং সেগুলোতে মোরালেস-রেয়েসের নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছিল। তবে তদন্তকারীরা আবিষ্কার করেন যে, মোরালেস-রেয়েস ইংরেজি পড়তে বা লিখতে পারেন না এবং তার হাতে লেখা নমুনা চিঠির লেখার সঙ্গে মেলে না।
স্কট, যিনি বর্তমানে মিলওয়াকি কাউন্টি জেলে রয়েছেন, জেল থেকে করা ফোনালাপে স্বীকার করেন যে, তিনি মোরালেস-রেয়েসকে ফাঁসাতে এই চিঠিগুলো লিখেছেন। তিনি বলেন, “এই লোকটা অবৈধ অভিবাসী, তাকে ধরে নিয়ে গেলে আমার বিচার হবে না।” স্কট আরও বলেন, “যদি তাকে আইস (ICE) ধরে নিয়ে যায়, তাহলে আমার মামলাটা খারিজ হয়ে যাবে।”
এই ষড়যন্ত্রের জন্য স্কটের বিরুদ্ধে পরিচয় চুরি, সাক্ষী ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং জামিন লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি দোষী সাব্যস্ত হলে ২৮ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
অন্যদিকে, মোরালেস-রেয়েস এখনও আইস-এর হেফাজতে রয়েছেন। তার আইনজীবী কাইন ওউলাহান জানান, মোরালেস-রেয়েস একটি ইউ ভিসার জন্য আবেদন করেছেন, যা অপরাধের শিকার অভিবাসীদের জন্য নির্ধারিত। তবে এই ভিসা পাওয়ার প্রক্রিয়া দীর্ঘ এবং বর্তমানে তিনি তার মুক্তির জন্য আদালতে আবেদন করেছেন।
এই ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ব্যবস্থার দুর্বলতা এবং অনিবন্ধিত অভিবাসীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের একটি জ্বলন্ত উদাহরণ। মোরালেস-রেয়েসের পরিবার ও আইনজীবীরা আশা করছেন, তিনি দ্রুত মুক্তি পাবেন এবং তার বিরুদ্ধে আনা মিথ্যা অভিযোগের জন্য দায়ী ব্যক্তির যথাযথ শাস্তি হবে।