যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৪ জুন ২০২৫ তারিখে একটি নির্বাহী আদেশে ১২টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। এই দেশগুলির মধ্যে আফগানিস্তান, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, ইয়েমেন, সুদান, সিরিয়া, কিউবা, ভেনেজুয়েলা, উত্তর কোরিয়া, ভুটান এবং মিয়ানমার অন্তর্ভুক্ত। এছাড়াও, আরও ৭টি দেশের নাগরিকদের ওপর আংশিক ভ্রমণ বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে হাইতি, লাওস, সিয়েরা লিওন, তুর্কমেনিস্তান, বেলারুশ, রাশিয়া এবং পাকিস্তান।

Source: BBC | 5 June 2025 | Pic: Collected
এই নিষেধাজ্ঞার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা উদ্বেগ এবং সাম্প্রতিক একটি সহিংস ঘটনার উল্লেখ করা হয়েছে। কলোরাডোর বোল্ডারে একটি অগ্নিসংযোগ হামলায় ১২ জন আহত হওয়ার পর, ট্রাম্প প্রশাসন এই নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নেয়। যদিও হামলাকারী একজন মিশরীয় নাগরিক ছিলেন, মিশর এই নিষেধাজ্ঞার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত নয়।
নতুন এই নিষেধাজ্ঞা পূর্ববর্তী “মুসলিম নিষেধাজ্ঞা”র সম্প্রসারিত রূপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ২০১৭ সালে ট্রাম্পের প্রথম প্রশাসনের সময়ে আরোপিত এই নিষেধাজ্ঞা ২০২১ সালে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কর্তৃক প্রত্যাহার করা হয়েছিল। বর্তমানে, নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা দেশগুলির নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, এবং কিছু দেশের নাগরিকদের ওপর আংশিক বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, যেমন পর্যটন ও শিক্ষাগত ভিসার সীমাবদ্ধতা।
এই নিষেধাজ্ঞা আন্তর্জাতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। সোমালিয়া যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নিরাপত্তা উদ্বেগ নিয়ে আলোচনার আগ্রহ প্রকাশ করেছে, অন্যদিকে ভেনেজুয়েলার সরকার এই নিষেধাজ্ঞাকে “ফ্যাসিবাদী” আখ্যা দিয়ে নিন্দা জানিয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলি এই নিষেধাজ্ঞাকে বৈষম্যমূলক ও অমানবিক বলে সমালোচনা করেছে।
যদিও বাংলাদেশ এই নিষেধাজ্ঞার তালিকায় নেই, তবে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশ যেমন পাকিস্তান এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে। এটি বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য সতর্কবার্তা হতে পারে, বিশেষ করে যারা যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ বা অভিবাসনের পরিকল্পনা করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতির পরিবর্তন বাংলাদেশের অভিবাসী ও শিক্ষার্থীদের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
ট্রাম্পের নতুন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আন্তর্জাতিক অভিবাসন নীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন নির্দেশ করে। এই নিষেধাজ্ঞা বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে এবং বৈশ্বিক অভিবাসন প্রবণতায় পরিবর্তন আনতে পারে। বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য এটি একটি সতর্কবার্তা, যাতে তারা যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ বা অভিবাসনের পরিকল্পনা করার সময় এই নতুন নীতিমালার বিষয়টি বিবেচনা করেন।