মিউনিখের আলিয়াঞ্জ এরেনায় স্পেনের বিপক্ষে ২–২ গোলে গিয়ে অতিরিক্ত সময় শেষে পর্তুগাল ৫–৩ পেনাল্টিতে জয়ী, এবং সেই মুহূর্তে ৪০ বছর বয়সী অধিনায়ক ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর চোখ থেকে আবেগে জল ঝরল। একটি আন্তর্জাতিক ম্যাচে রোনালদো এতটা আবেগী দেখেছি আমরা খুব কম সময়।

Source: Ittefaq | 9 June 2025 | Pic: Collected
এই চমকপ্রদ জয়ের নেপথ্যে নিহিত কাহিনী আরও আকর্ষণীয়। ম্যাচ শুরু হয় স্পেনের ড্রাইভিং টোনে—মার্টিন জুবিমেন্ডি ও মিকেল ওয়ার্জাবাল গোলের মাধ্যমে বাড়তি অন্যতমতাকে নিয়েছিল। কিন্তু পর্তুগালের তরুণ নুনো মেন্ডেস প্রথম গোল দিয়ে সমতা ফিরিয়ে আনে; এরপর মধ্যাহ্নার আগে আবারও এগিয়ে যায় স্পেন। তখনই মাঠে নেমে আসে রোনালদো—৬১ মিনিটে তার ১৩৮তম আন্তর্জাতিক গোল মাঠে নামিয়ে দেয় ম্যাচকে জয়ের পথে; উত্তেজনা ফেরে।
রোনালদো ম্যাচে ৮৮ মিনিটে বর্জ্য ব্যথাজনিত ইনজুরির কারণে নামলেও, দল ফিরে আসে যোগ্যতা ও নেতৃত্বের পেছনে। অতিরিক্ত সময়ে কোনো দল জয়ী না হলে ম্যাচ চলে যায় পেনাল্টি শুট-আউটে। সেখানে রাবেন নেভেস শেষ পেনাল্টিতে নির্ভুল শটে ট্রফি নিশ্চিত করেন– পর্তুগাল হয়ে ওঠে প্রথম দেশ, যা ইওয়েফা নেশনস লিগ দুইবার জিতেছে।
পুরো ম্যাচজুড়ে রোনালদো শুধু গোল করেননি—নিজস্ব দায়িত্বের উদাহরণ হয়ে উঠেছেন। খেলা শেষে রোনালদো বলেন, “ক্লাবে অনেক খেতাব রয়েছে, কিন্তু নিজের দেশের হয়ে জেতা আলাদা আনন্দ। চোখের জল সেই দায়িত্বের পালনের অনুভূতি—Duty done,”। সামাজিক টিভিতে সেই দৃশ্য দেখিয়েছিল এক মাতাল আবেগের ঢেউ—রোনালদোর জন্য আজীবনের অনুপ্রেরণা।
দশ বছর আগেই নেশনস লিগ জয় করেন; কিন্তু ৪০ বছরের মধ্যে আবারো একই খেতাবে বিশিষ্ট হয়ে ওঠেন তিনি। এরইমধ্যে রোনালদো ২২১তম ম্যাচে ১৩৮তম গোল করে আন্তর্জাতিক ফুটবলের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন।
চার দশকের ক্যারিয়ারে একের পর এক অনন্য কীর্তি—২০১৬ ইউরো জয়ের মতো তার প্রথম আন্তর্জাতিক টিটল, ২০১৯ নেশনস লিগ, এবং এবার দ্বিতীয় নেশনস লিগ জয়—সবকিছু মিলিয়ে ১০০ শতাংশ সাহস ও নিবেদন প্রমাণিত হলো। এমন গল্প কেবল ফুটবলের পেছনের কষ্ট ও আত্নত্যাগের দৃষ্টান্ত, তা পুরো বিশ্বের জন্য অনুপ্রেরণা।
এই আবেগঘন জয়ের পর প্রশ্ন জাগে—রোনালদোর ফিউচার কী? তার চুক্তি চলমান অ্যাল-নাস্র ক্লাবে, যা জুন শেষে শেষ হচ্ছে। তবে রোনালদো স্বীকার করেছেন, “চোট না হলে আমি আরও খেলতে চাই।” তিনিই মেরিন এবং পেনাল্টিকে ভাসা চালক।
আরও বড় সম্ভাবনার আলোচনায় রয়েছে: ২০২৬ বিশ্বকাপে মাঠ চালু রাখবেন কি? তার অক্ষয় কর্মক্ষমতা ও উদ্যমের পরিপ্রেক্ষিতে এটা আরো বড় রোমাঞ্চের সম্ভাবনা তৈরি করেছে।