বিশ্ব অর্থনীতির দুই প্রধান খেলোয়াড় যুক্তরাষ্ট্র ও চীন আবারও বাণিজ্যিক সমঝোতার পথে হাঁটছে। দীর্ঘদিনের ট্যাক্স-ওয়ার ও প্রযুক্তিগত টানাপোড়েনের পরে অবশেষে লন্ডনে অনুষ্ঠিত একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে দুই দেশ ‘স্থায়ী ও কার্যকর’ বাণিজ্য চুক্তির চেষ্টা চালাতে সম্মত হয়েছে। এই আলোচনার মূল কেন্দ্রে রয়েছে ‘রেয়ার আর্থ মিনারেলস’ নিয়ে উদ্বেগ, যেগুলো আধুনিক প্রযুক্তির জন্য অপরিহার্য এবং যার বড় অংশের জোগানদাতা চীন।

Source: The Washington Post| 11 June 2025 | Pic: Collected
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বৈশ্বিক প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা শিল্পে রেয়ার আর্থ উপাদানের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এটি কৌশলগত অগ্রাধিকার। চীনের ওপর নির্ভরতা কমাতে চায় ওয়াশিংটন, কিন্তু চীন বলছে—তাদের ভৌগোলিক সম্পদকে চাপের মুখে ছাড় দেবে না।
লন্ডনে দুই দেশের উপদেষ্টা পর্যায়ের প্রতিনিধিরা স্বীকার করেন, পূর্ববর্তী বাণিজ্যচুক্তিগুলোর ব্যর্থতা ছিল ‘দ্বিপাক্ষিক বোঝাপড়ার ঘাটতি’। এইবারের আলোচনায় একে অপরের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, শিল্প খাতের ভবিষ্যৎ এবং আন্তর্জাতিক বাজারে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা বলেন, “বাণিজ্য কোনো শূন্য-সমীকরণ খেলা নয়। চীন ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়ের জন্যই লাভজনক অবস্থানে আসার পথ তৈরি করতে হবে।” অপরদিকে চীনা প্রতিনিধিরা জানান, “পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিভঙ্গিই পারে অর্থনৈতিক শান্তি ফিরিয়ে আনতে।”
বিশ্ব বাজারে ইতোমধ্যে এই আলোচনার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ইউরোপীয় স্টক সূচকে ইতিবাচক প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে এবং খনিজ খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ারে উল্লম্ফন দেখা গেছে।
এই আলোচনা শুধু দুই দেশের নয়—বিশ্বের জন্যও তাৎপর্যপূর্ণ। দক্ষিণ এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার অনেক দেশ রেয়ার আর্থ সরবরাহ এবং প্রযুক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে এই সমঝোতার প্রভাব অনুভব করবে। বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য এটি একটি নতুন অর্থনৈতিক কৌশল ঠিক করার সংকেত।
তবে অনেক বিশ্লেষক সতর্ক করে দিয়েছেন যে, অতীতে চীনের সঙ্গে হওয়া অনেক প্রতিশ্রুতি বাস্তবে রূপ নেয়নি। তাই এবার কতটা অগ্রগতি হবে, সেটি নির্ভর করছে বিশ্বাসযোগ্য বাস্তবায়ন কাঠামোর ওপর।