আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে আগামী ২৪ জুনের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত দুই সাবেক শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় হাজিরার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে ট্রাইব্যুনাল কর্তৃপক্ষ।
গত সোমবার (১৬ জুন) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

Source: Ittefaq | 17 June 2025 | Pic: Collected
আদেশে বলা হয়, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোর ব্যাখ্যা দিতে তাদের আদালতে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত থাকতে হবে। বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তাদের এই নির্দেশ জানানো হয়েছে এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তারা উপস্থিত না হলে তাদের অনুপস্থিতিতেই বিচার প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া হবে।
এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও বিচার ব্যবস্থার এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। কারণ এর আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাবেক কোনো প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এমন প্রকাশ্য বিজ্ঞপ্তি ও আত্মসমর্পণের নির্দেশ খুব কমই দেখা গেছে।
এই মামলার পটভূমিতে জানা যায়, ২০২৩ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত alleged গণহত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালসহ কয়েকজন উচ্চপদস্থ ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর গুলিবর্ষণ ও হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবেই অভিযুক্তদের নাম উঠে আসে।
আদালতে শুনানিতে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তিনি অভিযোগপত্র পাঠ করে শোনান এবং আদালত মামলাটি প্রাথমিকভাবে গ্রহণ করে। শুনানির পর ট্রাইব্যুনাল অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নতুন করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করে।
তবে শেখ হাসিনা বা আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। রাজনৈতিক মহলে এই ঘটনায় নানা ধরনের আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এই মামলার বিচার দেশের আইনের শাসন ও জবাবদিহির ক্ষেত্রে একটি বড় পরীক্ষা হতে যাচ্ছে।
আগামী ২৪ জুন এই মামলার পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এই সময়ের মধ্যেই অভিযুক্তদের ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে।