আকাশে ওড়ার মাত্র ৪০ সেকেন্ডের মধ্যেই বিধ্বস্ত হয় এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার ফ্লাইট ১৭১। আহমেদাবাদের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ঘটানো এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে এক বিস্তৃত তদন্ত।
গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ৩৯ মিনিটে ২৪২ যাত্রী ও প্রায় ১০০ টন জ্বালানি নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল লন্ডনগামী ফ্লাইটটি। ককপিট থেকে একমাত্র ‘মে ডে’ কল আসার পর বিমানটি দ্রুত উচ্চতা হারিয়ে পড়ে যায়।

Source: BBC Bangla | 20 June 2025 | Pic: Collected
কীভাবে এগোচ্ছে তদন্ত?
তদন্তকারীরা এখন বিমানের ব্ল্যাক বক্স (ককপিট ভয়েস ও ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার), ইঞ্জিনের ধ্বংসাবশেষ, টারবাইন ব্লেড, জ্বালানি ব্যবস্থা ও ককপিটে ঘটে যাওয়া প্রতিটি মুহূর্ত বিশ্লেষণ করছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিমানের দুটি ইঞ্জিন একসঙ্গে ব্যর্থ হওয়া অত্যন্ত বিরল ঘটনা। প্রশ্ন উঠেছে—এটি কি পাখির আঘাত, জ্বালানির দূষণ, নাকি পাইলটদের ভুলে ইঞ্জিনের জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল?
সাবেক মার্কিন নিরাপত্তা কর্মকর্তা পিটার গোয়েলজ বলেন, “যদি দেখা যায় ইঞ্জিনগুলো শক্তি উৎপাদন করেনি, তাহলে ককপিটে মানবিক ত্রুটি বা সিস্টেমগত ব্যর্থতা তদন্তে আসবে।”
প্রযুক্তির সহায়তায় তদন্ত
এখনকার আধুনিক ফ্লাইট রেকর্ডার প্রতি সেকেন্ডে শত শত ডেটা ধারণ করে। এগুলো থেকে পাওয়া তথ্যই তদন্তকারীদের জন্য সবচেয়ে বড় সহায়ক। তদন্তকারীরা বোয়িং, এয়ার ইন্ডিয়া, জিই (ইঞ্জিন প্রস্তুতকারক), ভারতীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছেন।
ধ্বংসাবশেষ পুনর্গঠন, রিফুয়েলিং যন্ত্র, সার্ভিস হিস্ট্রি, ক্রুদের লাইসেন্স ও প্রশিক্ষণ, এবং ফ্লাইট লগ পর্যালোচনা করা হচ্ছে। প্রতিটি স্ক্রু, নাট-বল্টু থেকে শুরু করে প্রতিস্থাপন হওয়া যন্ত্রাংশ পর্যন্ত সবই বিশ্লেষণের আওতায়।
ভারতের অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে বোয়িং ৭৮৭ বিমানের ২৪টি ইউনিটে ‘বড় ধরনের কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি’ ধরা পড়েনি।
তদন্ত কতদূর?
আইসিএও-র নিয়ম অনুযায়ী, ৩০ দিনের মধ্যে একটি প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হবে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে সময় লাগবে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ঘটনার কারণ চিহ্নিত করা সম্ভব হলেও আসল কারণ বুঝতে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে।
এই দুর্ঘটনা শুধু এয়ার ইন্ডিয়ার জন্য নয়, বরং বোয়িং এবং আন্তর্জাতিক বিমানশিল্পের জন্যও একটি বড় সতর্ক সংকেত হয়ে উঠেছে।