মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আবারও তুঙ্গে। ইরান থেকে ছোড়া ১০টি ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে ৫টি সরাসরি আঘাত হেনেছে ইসরাইলের ভূখণ্ডে। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। এই ঘটনায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তীব্র উদ্বেগ দেখা দিয়েছে এবং একটি বড় ধরনের সামরিক সংঘাতের আশঙ্কা বাড়ছে।

Source: Somoy News | 21 June 2025 | Pic: Collected
কী ঘটেছে?
স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতে ইরান থেকে একযোগে এই ১০টি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করা হয়। ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা “আইরন ডোম” কিছু ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে ভূপাতিত করলেও, অন্তত পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরাইলের বিভিন্ন স্থানে বিস্ফোরিত হয়।
আঘাতপ্রাপ্ত এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ তেলআভিভ, বেজার শহরের উপকণ্ঠ এবং একটি সামরিক গুদামঘর।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ‘মাঝারি পাল্লার’ এবং একাধিক ক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। কিছু এলাকায় আগুন লেগে যায় এবং বেশ কয়েকটি অবকাঠামো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি
এখন পর্যন্ত কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া না গেলেও, অন্তত ১৪ জন আহত হয়েছে বলে দেশটির জরুরি সেবা বিভাগ জানিয়েছে। কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বেসামরিক জনগণকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং অনেক এলাকায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তারা দুই দেশকে উত্তেজনা প্রশমন এবং সরাসরি সংলাপে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন,
“মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ হলে তার প্রভাব শুধু এই অঞ্চলে সীমাবদ্ধ থাকবে না, গোটা বিশ্বকেই এর মূল্য দিতে হবে।”
ইরান কী বলছে?
তেহরান এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেনি। তবে দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ‘ইসরায়েলের আগ্রাসনের জবাবে কঠোর ব্যবস্থা’ নেওয়ার হুঁশিয়ারি সম্প্রচারিত হয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সম্প্রতি সিরিয়ায় ইরান ঘনিষ্ঠ এক সামরিক ঘাঁটিতে ইসরায়েলি হামলায় নিহতদের বদলা নিতেই এই পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরান।
যুদ্ধ কি অনিবার্য?
এই হামলার পর পরিস্থিতি যেদিকে গড়াচ্ছে, তাতে আরেকটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের সম্ভাবনা একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। ইসরায়েল ইতিমধ্যে সীমান্তে সেনা সমাবেশ বাড়িয়েছে এবং জবাবি হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বর্তমানে গোটা মধ্যপ্রাচ্য এক উত্তপ্ত বারুদের স্তুপে পরিণত হয়েছে। ইরান ও ইসরায়েলের এই পাল্টাপাল্টি হামলা শুধু এই দুই দেশ নয়, বরং পুরো অঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি। আন্তর্জাতিক মহলের এখনই সক্রিয় ভূমিকা নেওয়া জরুরি, নইলে যেকোনো মুহূর্তে আগুন ছড়িয়ে পড়তে পারে আরও অনেক দেশে।