যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যকার সামরিক উত্তেজনার পর এবার কূটনৈতিক চাপের নতুন ধাপ শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও প্রকাশ্যে চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন—তারা যেন ইরানকে হার্মুজ প্রণালী বন্ধ করতে না দেয়। কারণ এই জলপথের উপর নির্ভরশীল বিশ্বের এক-পঞ্চমাংশ তেল সরবরাহ। এমন পরিস্থিতিতে তেল সরবরাহ ব্যাহত হলে তা বিশ্ব অর্থনীতিতে চরম বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে।

Source: BBC | 23 June 2025 | Pic: Collected
রুবিও এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “চীন ইরানি তেলের প্রধান ক্রেতা, তাই তাদের সরাসরি তেহরানের সঙ্গে কথা বলা উচিত। যদি ইরান প্রণালী বন্ধ করে, সেটি তাদের নিজের জন্য অর্থনৈতিক আত্মহত্যা হবে।” তিনি আরও সতর্ক করে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র এর মোকাবেলায় প্রস্তুত, তবে এই পদক্ষেপ বিশ্বের অন্যান্য অর্থনীতিকে আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করবে।”
বিশ্ববাজারে এরই মধ্যে এর প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। ব্রেন্ট ক্রুড অয়েল এর দাম এক লাফে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ব্যারেলপ্রতি ৮১.৪০ ডলারে, যা গত পাঁচ মাসে সর্বোচ্চ। পরে কিছুটা কমলেও দাম আগের তুলনায় এখনও ১.৪% বেশি।
চীনও এই সংকটে তার অবস্থান স্পষ্ট করেছে। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম CCTV ও Global Times-এ প্রকাশিত বার্তায় চীন বলেছে, “মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক হামলা এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতাকে আরও দুর্বল করেছে।” জাতিসংঘে চীনা রাষ্ট্রদূত ফু কং বলেন, “সব পক্ষকে বলপ্রয়োগ থেকে বিরত থাকতে হবে এবং আগুনে যেন আর কেউ তেল না ঢালে।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরান যদি হার্মুজ প্রণালী বন্ধ করে দেয়, তাহলে শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়—চীন, ভারত, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো তেল-নির্ভর বড় অর্থনীতিগুলোকেও বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হবে। ভান্ডনা হরি, আন্তর্জাতিক জ্বালানি বিশ্লেষক, বলেন, “ইরান প্রণালী বন্ধ করলে চীনও তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে—সুতরাং কৌশলগতভাবে এটি তাদের স্বার্থবিরোধী।”
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে আরও কঠোর বার্তা দিয়ে বলেছেন, “তারা যদি পারমাণবিক কর্মসূচি না থামায়, তাহলে পরবর্তী আঘাত হবে আগের চেয়েও ভয়াবহ।” তবে আন্তর্জাতিক পরমাণু সংস্থা (IAEA) বলেছে, তারা এখনো ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ করতে পারেনি।