যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন আফ্রিকা, এশিয়া, ইউরোপ এবং ক্যারিবীয় অঞ্চলের ‘উচ্চ ঝুঁকির’ বন্দি অভিবাসীদের কিউবার গুয়ানতানামো বে নৌঘাঁটির আটক কেন্দ্রে স্থানান্তর করেছে। ফেডারেল সরকারের অভ্যন্তরীণ নথির বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম CBS News।

Source: Online Report | 2 July 2025 | Pic: Collected
প্রসঙ্গত, এই গুয়ানতানামো বে ঘাঁটি দীর্ঘদিন ধরেই সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে আটক ব্যক্তিদের জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে এবার চীন, জ্যামাইকা, লাইবেরিয়া ও যুক্তরাজ্যের অভিবাসী বন্দিদেরও সেখানে রাখা হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে প্রকাশ হয়েছে।
CBS জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা ও অভিবাসন কর্তৃপক্ষ এসব বন্দিদের সহিংস অথবা গুরুতর অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার রেকর্ডের ভিত্তিতে ‘উচ্চ ঝুঁকির’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। সেসব বন্দিদের দেশে ফেরত পাঠানোর আগপর্যন্ত গুয়ানতানামোতে আটকে রাখা হচ্ছে।
ট্রাম্প প্রশাসন আগে থেকেই এই বন্দি কেন্দ্রে লাতিন অ্যামেরিকার দেশ যেমন—নিকারাগুয়া ও ভেনেজুয়েলার অভিবাসীদের রাখছিল। তবে আফ্রিকা, এশিয়া ও ইউরোপীয় অভিবাসীদের এই কেন্দ্রে স্থানান্তর ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসনবিরোধী নীতিতে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
গুয়ানতানামোতে বন্দিদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে এক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা সিবিএসকে জানান, “মঙ্গলবার পর্যন্ত সেখানে ৫৪ জন অভিবাসী বন্দি রয়েছে।” এই পদক্ষেপকে অভিবাসন এবং মানবাধিকারের দৃষ্টিকোণ থেকে ‘বিতর্কিত’ বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এ বিষয়ে হোয়াইট হাউস বা ট্রাম্প প্রশাসনের কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি এখনো পাওয়া যায়নি। তবে অভিবাসন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (ICE)-এর একাধিক কর্মকর্তা ইঙ্গিত দিয়েছেন, ট্রাম্প প্রশাসন আগামী দিনে আরও বেশি সংখ্যক বিদেশি অভিবাসীকে গুয়ানতানামোতে স্থানান্তরের পরিকল্পনা করছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সন্ত্রাসবাদের সন্দেহভাজন বন্দিদের জন্য নির্মিত কারাগারকে সাধারণ অভিবাসীদের জন্য ব্যবহারের সিদ্ধান্ত মানবাধিকার লঙ্ঘনের সামিল হতে পারে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো ইতোমধ্যেই এই বিষয়ে উদ্বেগ জানাতে শুরু করেছে।
এমন পরিস্থিতিতে গোটা বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতি এবং বন্দি ব্যবস্থাপনা নিয়ে ফের একবার আলোচনা শুরু হয়েছে। গুয়ানতানামো, যেটি একসময় বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ওবামা, সেই কারাগার এখন অভিবাসী সংকটে নতুন করে আলোচনায়।