জুনে ৪৩৭ মিলিয়ন ডলারের এককালীন অর্থ প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার ভারতের আদানি পাওয়ার সংস্থার পূর্ণ বকেয়া পরিশোধ করেছে, যা মার্চ ৩১ তারিখ পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহের সব পাওনামূলক অর্থেই প্রযোজ্য ।
অর্থ প্রদানের ফলে আদানি পাওয়ার ও বাংলাদেশের পিপিএ (Power Purchase Agreement) পুনরায় স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে পাচ্ছে। আদানি পাওয়ারের ২০১৭ সালে ভারতের ঝাড়খণ্ডের গড্ডায় নির্মিত ১,৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লাভিত্তিক প্ল্যান্ট বাংলাদেশের প্রায় ১০% বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাচ্ছে ।

3 July 2025 | Pic: Collected
এই এককালীন পেমেন্ট ছিল আদানি পাওয়ারের সবচেয়ে বড় এককালীন গ্রহণযোগ্য অর্থ, যেখানে আগের মাসগুলোতে তারা প্রায় ৯০–১০০ মিলিয়ন ডলার প্রতিমাসে পেত । সুতরাং, এটাই ছিল উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, এই অর্থ প্রদান সর্বমোট পাওনাসহ লেট ফি, ক্যারিং চার্জ ইত্যাদি সব মিটিয়ে পূর্ণ মীমাংসা করেছে ।
তবে কিছু প্রতিবেদন অনুযায়ী জুন মাসে পেমেন্টের প্রথম পর্যায়ে ৩৮৪ মিলিয়ন ডলার দেওয়া হয়েছিল, বাকি ৫৩ মিলিয়ন ডলার মাসের শেষেই পরিশোধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ।
ভবিষ্যতের নির্ভরযোগ্যতা নিশ্চিত করতে:
- বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বিলের জন্য দুটি মাসের বিলের সমপরিমাণ এলসি (Letter of Credit)
- সরকারি গ্যারান্টি সুনিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ ।
এই ব্যবস্থাগুলো বিকাশমান পেমেন্ট গ্যারান্টি ও আর্থিক স্থিতিশীলতা প্রদান করবে, যার মাধ্যমে আদানি পাওয়ার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও বিনিয়োগে আরও স্বচ্ছতা আসবে ।
লেনদেনের প্রেক্ষাপট ও প্রতিক্রিয়া
- মার্চ ২০২৫ থেকে বাংলাদেশ আদানি পাওয়ারের থেকে পূর্ণ সরবরাহ পেতে শুরু করে, কারণ পূর্ব থেকেই প্রতি মাসে নির্দিষ্ট অর্থ দিয়ে আসছিল ।
- ২০২২–২৩ সালের রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ ও ২০২৪ সালের রাজনৈতিক অস্থিতিশ্রতা বাংলাদেশের আমদানি ব্যয় ও বৈদেশিক রিজার্ভে চাপ সৃষ্টি করেছিল, ফলে আদানি সম্পর্কিত টাকা পরিশোধে বিলম্ব হয়েছিল ।
- ২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহকে অর্ধেক করার মতো পদক্ষেপ নেয়েছিল আদানি পাওয়ার, যা মার্চ ২০২৫ থেকে পূর্ণরূপে পুনরুদ্ধার হয় ।
- মে ২০২৫-এর মধ্যে আদানির দাবি ছিল প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে আজকের মিমাংসার পর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রায় ১.২ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ হয়েছে ।
সুতরাং, এই এককালীন পেমেন্ট ভবিষ্যতে বিলম্বিত ফি নেবেনা, এবং আর্থিক ও আইনি নিয়মে চুক্তি সুষ্ঠু ভাবে চলবে—এতে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্যও উঠে এসেছে ।
এই পদক্ষেপ বাংলাদেশের মূল্যায়নযোগ্য দায়িত্ববোধ, আর্থিক স্থিতিশীলতা ও আন্তর্জাতিক পিপিএ ও বাণিজ্যিক চুক্তির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে। একইসাথে, এটি ভবিষ্যতের পেমেন্ট, এলসি ও রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টি ব্যবস্থার মাধ্যমে আরো মজবুততা পেয়েছে—যা আনবিরোধে আন্তর্জাতিক চুক্তির উল্লেখযোগ্য দিক হয়ে থাকবে।