মানুষ অনেক সময় কিডনিকে নীরব ঘাতক হিসেবে উল্লেখ করেন—কারণ প্রাথমিক পর্যায়ে এ রোগ সাধারণত কোনো লক্ষণ দান করে না । তবে নিচের পাঁচ লক্ষণ দেখা দিলে অবহেলা করলেই বিপদ—এখনই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন:

6 July 2025 | Pic: Collected
১. ক্রমাগত ক্লান্তি ও দুর্বলতা
কিডনি ঠিক মতো কাজ না করলে রক্তে টক্সিন জমে শরীর ক্লান্ত হয়। এছাড়া এ রক্তে লোহিত রক্তকণিকা কমে যায়, যার ফলে রক্তাল্পতা সৃষ্টি হয়—ফলে দীর্ঘস্থায়ী দুর্বলতা, মনোযোগের অভাব ও হাঁটা চলায় শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে ।
২. প্রস্রাবের আচরণে পরিবর্তন
ঘন ঘন, বিশেষ করে রাতে, প্রস্রাব হলে মনোযোগ দিন। প্রস্রাব ফেনাযুক্ত হলে (প্রোটিন নিঃসরণ), রক্তমিশ্রিত হলে বা গাঢ় রঙের হলে—সবাই কিডনির সমস্যার সম্ভাব্য লক্ষণ ।
৩. পা, গোড়ালি ও মুখমণ্ডলে ফোলা
কিডনি পানি ও সোডিয়াম নিষ্কাশন না করতে পারলে শরীর ফুলে যায়—বিশেষ করে পা বা চোখের চারপাশে । এই ফোলাভাবকে কখনোই স্বাভাবিক ভাববেন না।
৪. ত্বকে শুষ্কতা ও চুলকানি
কিডনির ক্ষতি হলে যকৃত ও ফসফরাসের ভারসাম্য হারায়, যা ত্বকে চুলকানি সৃষ্টি করে । এর ফলে ত্বকের জ্বালা বা ডিম্বাকৃতির অবস্থা দেখা দিতে পারে।
৫. ক্ষুধা হ্রাস, স্বাদে পরিবর্তন, বমি ভাব
রক্তে ইউরেমিক টক্সিন জমে মুখে তিক্ততা, দুর্গন্ধ ও স্বাদ পরিবর্তন ঘটায় । এছাড়া বমি ভাব বা মল না চাওয়াও হতে পারে, যা সাধারণ হজমজনিত সমস্যা মনে হলেও কিডনি দুর্বলতার আশঙ্কা বাড়ায়।
কেন আলতো করে নেয়া যায় না?
কিডনি রোগ ধীরে ধীরে বাড়ে— প্রায় ৯০% ফাংশন হারিয়ে যাওয়ার আগে লক্ষণ প্রকাশ পায় না । এ কারণেই নিয়মিত পরীক্ষার অধীনে থাকা জরুরি।
করণীয়—এড়িয়ে যাবেন না দেরি:
- ঝুঁকি বিবেচনা করুন: ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, পারিবারিক ইতিহাস, বয়স ≥৬০, দীর্ঘমেয়াদী পেইনকিলার ও ধূমপান থাকলে স্মার্ট হোন ।
- নিয়মিত স্ক্রিনিং: রক্তে ক্রিয়েটিনিন, eGFR এবং প্রস্রাবে অ্যালবুমিন পরীক্ষা—প্রাথমিক নির্ণয়ে সহায়ক ।
- জীবনধারার পরিবর্তন: পর্যাপ্ত পানি পান, কম সোডিয়াম-প্রস্তুত খাবার, ফল, শাক, শস্য, নিয়মিত ব্যায়াম—これ দীর্ঘমেয়াদে কিডনি রক্ষা করে ।
- চাষা ও ডায়েট: উচ্চ রক্তচাপ ও রক্তে চিনির নিয়ন্ত্রণে বিশেষ খাবার ও প্রেসক্রিপশন ডায়েট যেমন DASH বা রেনাল ডায়েট কার্যকর ।
নীরব ঘাতক কিডনি রোগে লক্ষণ দেখা দিতেই চিকিৎসার দিয়েই সময় উপযোগী হস্তক্ষেপ জরুরি। উপরের পাঁচ লক্ষণ দেখা মাত্রই দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন—কারণ কিডনির যত্নই দীর্ঘ ও স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনের ভিত্তি।