সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ক্যাম্পে ২০২০ সালের ১০–১১ অক্টোবর পুলিশের হেফাজতে নিগ্রহের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করা যুবক রায়হান আহমেদের মামলায় প্রধান অভিযুক্ত সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁইয়ানকে (৩২), উচ্চ আদালতের জামিন আদেশের পর নিম্ন আদালত অনুমোদন দিলে গত ১০ আগস্ট দুপুরে তিনি সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার-২ থেকে জামিনে মুক্তি লাভ করেন। ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন এই জামিনের বিষয়ে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এর সিনিয়র জেল সুপারিনটেন্ডেন্ট প্রশান্ত কুমার বনিক নিশ্চিত করেছেন, “সকালেই হাইকোর্ট থেকে জামিন আদেশ আমরা পেয়েছিলাম এবং প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে বিকেলে তিনি কারাগার ছেছে গেছেন”।

16 August 2025 | Pic: Collected
রায়হান আহমেদ, কইলা এলাকার হাওলাদার পাড়া থেকে ১০ অক্টোবর গভীর রাতে তুলে নিয়ে আসা হয়েছিল এবং বন্দরবাজার আউটপোস্টে নির্যাতনের শিকার হন; পরদিন তিনি গুরুতর অবস্থা থেকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আকতার টান্নী ওই ঘটনায় হেফাজত মৃত্যুর (নিরোধ) আইন অনুযায়ী মামলা দায়ের করেন, এবং পুলিশ তদন্তে নির্যাতনের প্রমাণ পাওয়া যায়।
এরপর ২০২১ সালে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (PBI) আকবরকে প্রধান অভিযুক্ত করে মামলা দাখিল করে এবং তাকে ৯ নভেম্বর কনাইঘাট সীমান্ত এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া মামলা সংশ্লিষ্ট আরও কয়েকজন—ASI আশেক এলাহী, কনস্টেবল হারুন, তিতু চন্দ্র দাস, SI হাসান উদ্দিন এবং আকবরের স্বজন সাংবাদিক আবদুল্লাহ আল নোমান—কাউকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। রায়হানের পরিবারের পক্ষ থেকে জামিনের ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ এবং আশঙ্কা করা হয়েছে যে, তিনি দেশ ত্যাগ করতে পারেন।
এই মামলায় দীর্ঘদিন বিচারিক ব্যবস্থা চলছে—২০১৬ সালে অভিযোগ গঠন, তার পর ২০২২ সালে বিচারিক শুনানি শুরু হয়। জামিনের পর পরিবার একটি সামাজিক-ন্যাতিক ক্ষতির শিকার এবং মামলার গতি বন্ধ মনে করছে, এবং তারা সঠিক বিচার চাইছে। মামলার উপর জনমনে সন্দেহ ও বিতর্ক ক্রমেই বাড়ছে, কারণ গুরুতর হেফাজত নির্যাতনের ঘটনা এবং প্রধান অভিযুক্তের জামিন—প্রশ্ন তুলেছে দেশের বিচার ব্যবস্থার উপলব্ধতা ও মানবাধিকারের প্রতি প্রতিশ্রুতি নিয়ে।