বাংলাদেশের তৈরি সোলার প্যানেল এখন বিশ্ব বাজারে জায়গা করে নিচ্ছে। সম্প্রতি দেশের অন্যতম প্রযুক্তি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি পণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান SOLshare এবং PUMAC Energy যৌথভাবে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ৪ বছরের রপ্তানি চুক্তি সম্পন্ন করেছে। এই চুক্তির আওতায় প্রথম চালানটি ১৯ জুন ২০২৫ তারিখে পাঠানো হয়েছে ক্লিনগ্রিড ইনকরপোরেশন (CleanGrid Inc.)-এর কাছে, যার আর্থিক মূল্য প্রায় ২১৫ কোটি টাকা।

Source: The Business Standard | 23 June 2025 | Pic: Collected
এই চুক্তি অনুযায়ী, প্রতিবছর প্রায় ২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন সোলার প্যানেল যুক্তরাষ্ট্রে সরবরাহ করা হবে। প্যানেলগুলো মূলত কৃষি খাত, গ্রীন হাউজ, এবং দূরবর্তী অঞ্চলের অফ-গ্রিড বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ব্যবহৃত হবে। এতে বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রযুক্তির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি যেমন বৃদ্ধি পাবে, তেমনি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বাংলাদেশে তৈরি এসব সোলার প্যানেল আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে উচ্চ কার্যকারিতাসম্পন্ন সেল, দীর্ঘস্থায়ী ব্যাকশীট, শক্তিশালী ফ্রেম, ও বৈশ্বিক মানদণ্ডের শংসাপত্র (IEC, UL প্রমুখ)। SOLshare কোম্পানির সহপ্রতিষ্ঠাতা ড. সানজিদা হাসান বলেন, “এই রপ্তানির মাধ্যমে আমরা প্রমাণ করতে পেরেছি—বাংলাদেশ শুধু পোশাক রপ্তানির দেশ নয়, প্রযুক্তি রপ্তানিরও সক্ষমতা রাখে।”
এই রপ্তানি কার্যক্রম সফল করতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (BIDA), পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ও বিদ্যুৎ বিভাগ সক্রিয়ভাবে সহায়তা করেছে। এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরো (EPB) এবং বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে প্রযুক্তিপণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধিতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
বিশ্বব্যাপী নবায়নযোগ্য জ্বালানির চাহিদা ক্রমেই বাড়ছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো অফগ্রিড এবং গ্রিন এনার্জির দিকে ঝুঁকছে। এই পটভূমিতে বাংলাদেশের সোলার প্যানেল বিশ্বমানের বলে প্রমাণিত হওয়া দেশের জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা বহন করে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার মাহবুব রহমান বলেন, “এই রপ্তানি আমাদের অর্থনীতিতে নতুন খাতের সম্ভাবনা তৈরি করবে। শুধু রপ্তানিই নয়, দেশে কর্মসংস্থান, গবেষণা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রও প্রসারিত হবে।”
বাংলাদেশের তৈরি প্রযুক্তিপণ্য, বিশেষ করে সোলার প্যানেল আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করা নিঃসন্দেহে একটি বড় অর্জন। এটি শুধু বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের নতুন পথ খুলে দেবে না, বরং ‘Made in Bangladesh’ ব্র্যান্ডের ভাবমূর্তি বিশ্ব দরবারে আরও শক্তিশালী করবে।