যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর প্রতিক্রিয়া: পুতিন ও জিনপিংয়ের সঙ্গে মোদির বৈঠককে ‘লজ্জাজনক’ বলে অভিহিত

Date:

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্প্রতি সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন, যেখানে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। এই বৈঠককে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো ‘লজ্জাজনক’ বলে অভিহিত করেছেন। নাভারো বলেন, “মোদিকে শি জিনপিং ও পুতিনের সঙ্গে হাত মেলাতে দেখা সত্যিই লজ্জার। আমি বুঝতে পারছি না তিনি কী ভাবছেন। আমরা আশা করি, তিনি বুঝবেন যে তাকে আমাদের সঙ্গে থাকতে হবে, রাশিয়ার সঙ্গে নয়।”

নাভারো আরও দাবি করেন, ভারত রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কিনে তা প্রক্রিয়াজাত করে এবং প্রিমিয়াম দামে রপ্তানি করছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য উদ্বেগের বিষয়। তিনি ভারতকে ‘ক্রেমলিনের লন্ড্রোম্যাট’ বলে অভিহিত করেন। যুক্তরাষ্ট্রের এই সমালোচনা আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। অনেকের মতে, এটি ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের জটিলতা আরও বাড়াবে।

2 September 2025 | Pic: Collected


ভারদীয় পক্ষ এই সমালোচনাকে ‘অন্যায্য’ বলে অভিহিত করেছে। ভারতের কর্মকর্তারা জানান, রাশিয়া থেকে তেল কেনা তাদের দেশের জ্বালানি খরচ কমাতে এবং ঘরোয়া বাজার স্থিতিশীল রাখতে অপরিহার্য। তারা যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনাকে ভারতের জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী বলে অভিহিত করেছেন। ভারতের অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, রাশিয়া থেকে তেল কিনতে বাধ্য হওয়া ভারতের জন্য সময়োপযোগী পদক্ষেপ। তেলের দাম নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি এটি ভারতের শক্তিশালী জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাহায্য করছে।

এই বৈঠক আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ভারতের রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে সম্পর্কের গভীরতা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার সম্পর্কের জটিলতা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই বৈঠক ভবিষ্যতে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক নীতি এবং বাণিজ্যিক সম্পর্কের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে সামরিক সহযোগিতা, বাণিজ্যিক চুক্তি ও প্রযুক্তি বিনিময় ক্ষেত্রে।

যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা আরও শক্তিশালী হয়েছে কারণ সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলো এককভাবে বা সমন্বিতভাবে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ভারত পুতিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বজায় রাখায় পশ্চিমা দেশের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। মার্কিন কূটনীতিবিদরা মনে করছেন, এটি শুধুমাত্র অর্থনৈতিক নয়, নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক ক্ষেত্রে ভারতের অবস্থানকেও প্রভাবিত করতে পারে।

পাশাপাশি, চীনের সঙ্গে মোদির বৈঠকও আন্তর্জাতিক মনোযোগ কেড়েছে। শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ভারতীয় সম্পর্কের দৃঢ়তা দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, ভারত-চীন সীমান্ত সমস্যা এবং বাণিজ্যিক নীতি নির্ধারণে এই বৈঠকের ফলাফল গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মোদি পুতিন ও শির সঙ্গে এই বৈঠক কৌশলগতভাবে ভারতের স্বার্থ রক্ষা করার জন্য করেছেন, তবে পশ্চিমা দেশগুলো তা সন্দেহের চোখে দেখছে।

এই বৈঠকের প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও বিশ্লেষকরা ভারতকে নতুন কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে দেখছেন। যুক্তরাষ্ট্রের তোপের কারণে ভারতকে এখন দুই ধারার চাপের মধ্যে সমন্বয় করতে হবে – একদিকে রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বজায় রাখা, অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা। এই দুই শক্তির মধ্যে ভারসাম্য রাখাই হবে ভারতের ভবিষ্যৎ কূটনীতির মূল চ্যালেঞ্জ।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভারতের এমন পদক্ষেপ দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক মানচিত্রকেও প্রভাবিত করতে পারে। এই বৈঠকের প্রভাব শুধু কূটনৈতিক

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

Share post:

Subscribe

spot_imgspot_img

Popular

More like this
Related

নেপালে হোটেলে নেতা খুঁজতে এসে বাংলাদেশি ফুটবলার দেখে শান্ত বিক্ষুব্ধরা

নেপালের কাঠমান্ডুতে যখন চলছিল জেন জি বিরোধী প্রতিবাদ এবং...

বিশ্বজুড়ে সাড়া ফেলল শতভাগ কার্যকরী রাশিয়ার নতুন ক্যান্সার ভ্যাকসিন – এন্টারোমিক্স

রাশিয়ার নতুন ক্যান্সার ভ্যাকসিন ‘এন্টারোমিক্স’ বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞান ও চিকিৎসা...

অ্যামেরিকায় দ্রুত বাড়ছে চাগাস রোগ, বাড়ছে জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি

চাগাস রোগ এখন যুক্তরাষ্ট্রে বড় জনস্বাস্থ্য সংকটে পরিণত হচ্ছে,...

ড্রাগ কার্টেলের শক্ত ঘাঁটিতে ডিইএর অভিযান: গ্রেপ্তার ৬১৭, বিপুল মাদক ও অস্ত্র জব্দ

ড্রাগ কার্টেলের শক্ত ঘাঁটিতে ডিইএর অভিযান — ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট...