আর্জেন্টিনার মাটিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এমন একটি ম্যাচ যা কোটি ভক্তের কাছে হয়ে উঠেছে আবেগঘন ও ঐতিহাসিক, কারণ এটাই হতে পারে লিওনেল মেসির শেষ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ আর্জেন্টিনার ঘরের মাঠে, আর এই ম্যাচে নামলেই গড়তে যাচ্ছেন এক অনন্য রেকর্ড। বর্তমানে দক্ষিণ আমেরিকার বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে মেসির ম্যাচ সংখ্যা ৭১, আর মাত্র একটি ম্যাচ খেললেই তিনি ছুঁয়ে ফেলবেন ইকুয়েডরের কিংবদন্তি ডিফেন্ডার ইভান উর্তাদোর সর্বাধিক ৭২ ম্যাচ খেলার রেকর্ড। ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে মাঠে নামলেই তিনি এই কৃতিত্ব অর্জন করবেন, আর যদি ইকুয়েডরের বিপক্ষেও খেলেন, তবে তিনি হবেন কনমেবল বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা ফুটবলার।

4 September 2025 | Pic: Collected
উর্তাদো তার দীর্ঘ ক্যারিয়ারে টানা পাঁচটি বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে অংশ নিয়ে গড়েছিলেন এই রেকর্ড—১৯৯৪, ১৯৯৮, ২০০২, ২০০৬ ও ২০১০ সালে, আর এখন সেটিই ভাঙতে যাচ্ছেন মেসি। শুধু ম্যাচ খেলার ক্ষেত্রেই নয়, গোলের দিক থেকেও তিনি শীর্ষে, এখন পর্যন্ত বাছাইপর্বে তার গোল সংখ্যা ৩৪ যা তাকে দক্ষিণ আমেরিকার সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা করেছে। এ ছাড়াও চলতি আসরে কলম্বিয়ার লুইস দিয়াসের ৭ গোলকে পেছনে ফেলে আবারও সর্বোচ্চ গোলদাতার মুকুট পাওয়ার হাতছানি দিচ্ছে তাকে, কারণ বর্তমানে দিয়াসের গোল ৭ আর মেসির ৬।
তাই ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে একটি গোল করলেই তিনি আবারও শীর্ষে উঠে যাবেন। ম্যাচকে সামনে রেখে মেসি নিজেই জানিয়েছেন তার আবেগের কথা—এটাই হবে আর্জেন্টিনায় বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে তার শেষ ম্যাচ, যেখানে তার পরিবার, স্ত্রী, সন্তান, বাবা-মা ও ভাইবোনরা উপস্থিত থাকবেন গ্যালারিতে, যা তার জন্য একটি বিশেষ মুহূর্ত হয়ে উঠবে। এমন প্রেক্ষাপটে মেসির প্রতিটি পদক্ষেপ আর্জেন্টাইন জনগণকে আবেগে ভাসাচ্ছে, কারণ তিনি শুধু একজন খেলোয়াড় নন, বরং প্রজন্মের পর প্রজন্মের অনুপ্রেরণা হয়ে থাকা এক কিংবদন্তি।
এই ম্যাচে নামলেই রেকর্ড নিশ্চিত, আর গোল করলে আরও এক অনন্য কীর্তি যোগ হবে তার ক্যারিয়ারের খাতায়, যা প্রমাণ করবে বয়স বা সময় নয়, প্রতিভা ও ইচ্ছাশক্তিই একজন খেলোয়াড়কে কিংবদন্তি করে তোলে। বিশ্বের কোটি দর্শকের চোখ থাকবে এই ম্যাচে, যেখানে আবেগ, ইতিহাস ও বিদায়ের সুর মিলেমিশে তৈরি হবে এক মহাকাব্যিক রাত। মেসির ক্যারিয়ারজুড়ে অসংখ্য রেকর্ড ভাঙা ও গড়া হয়েছে, কিন্তু এই রেকর্ডটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি তার মাতৃভূমির মাটিতে এক আবেগঘন বিদায়ী মুহূর্তের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। শেষ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে রেকর্ড গড়ার পাশাপাশি সর্বোচ্চ গোলদাতার মুকুট ফেরত পাওয়ার সুযোগও তাকে ঘিরে তৈরি করেছে বাড়তি উত্তেজনা। তাই বলা যায়, আর্জেন্টিনায় মেসির এই ম্যাচ কেবল একটি খেলা নয়, বরং এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত, যা প্রমাণ করবে—লিওনেল মেসি নামটি চিরকাল ফুটবলের ইতিহাসে উজ্জ্বল হয়ে থাকবে।