ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুটি ম্যাচে হেরে সিরিজ হাতছাড়া করলেও তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলার সময় ইতিহাস গড়েছে। সাউদাম্পটনের মাঠে রবিবার অনুষ্ঠিত ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ইংল্যান্ড ৫ উইকেটে ৫০ ওভারে ৪১৪ রান সংগ্রহ করে। এই ইনিংসটি ওয়ানডে ক্রিকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তাদের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস হিসেবে ইতিহাসে জায়গা করে নিল।
জো রুট ও জ্যাকব বেথেল দুর্দান্ত জোড়া সেঞ্চুরি করেন। জেকব বেথেল ৮২ বলে ১১০ রান করেন, যেখানে ১৩টি চার ও তিনটি ছক্কা রয়েছে। জো রুট ৯৬ বলে ১০০ রান করেন, ৬টি চার মারেন। ওপেনার জেমি স্মিথ ৪৮ বলে ৬২ রান করেন ৯টি চার ও এক ছক্কা দিয়ে। জস বাটলারও ৩২ বলে ৬২ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেন, ৮টি চার ও একটি ছক্কা হাঁকিয়ে দলের স্কোর আরও বাড়ান। এই ইনিংসের মাধ্যমে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনআপের গভীরতা ও শক্তি স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

8 September 2025 | Pic: Collected
দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রতিরোধ করতে ব্যাটিংয়ের এই বিশাল সংগ্রহের পর বোলিংয়ে ইংল্যান্ড দাপট দেখায়। দক্ষিণ আফ্রিকা ২০.৫ ওভারে ৭২ রানে অলআউট হয়। ইংল্যান্ড ৩৪২ রানের বিশাল ব্যবধানের জয় পায়। ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে এটাই রানের দিক থেকে সব থেকে বড় জয়। এর আগে ২০২৩ সালে ভারত শ্রীলংকাকে ৩১৭ রানের ব্যবধানের মধ্যে হারিয়ে রেখেছিল সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড, যা এবার ইংল্যান্ড ভেঙেছে।
এই ম্যাচে ইংল্যান্ডের বোলিং ইউনিটও নজর কাড়ে। বোলাররা প্রোটিয়াদের ব্যাটসম্যানদের ওপর ধারাবাহিক চাপ সৃষ্টি করে, কোনোরকম সুযোগ ছাড়াই উইকেট তুলে নেন। বোলিংয়ের এই শক্তি ও পরিকল্পিত নিয়ন্ত্রণই ইংল্যান্ডকে বিশাল ব্যবধানের জয় এনে দিয়েছে।
ওয়ানডেতে ব্রিটিশরা এর আগে ৪৯৮, ৪৮১ ও ৪৪৪ রানের রেকর্ড গড়ে, যেখানে শ্রীলংকা চতুর্থ সর্বোচ্চ ৪৪৩ রানের ইনিংস খেলেছে। চলতি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর ম্যাচে ইংল্যান্ডের এই রেকর্ড ইনিংস খেলোয়ারদের দক্ষতা, পরিকল্পনা ও শক্তি প্রদর্শন করে।
তৃতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনআপের সামগ্রিক পারফরম্যান্স, বিশেষ করে জো রুট ও জ্যাকব বেথেলের সেঞ্চুরি, দলের জন্য এক ঐতিহাসিক জয় নিশ্চিত করে। এই ম্যাচের ফলে যদিও সিরিজ হার গেছে, তবে ইংল্যান্ড ক্রিকেট ইতিহাসে নিজেদের নাম উজ্জ্বলভাবে লিখেছে।
জো রুট ও জ্যাকব বেথেল ছাড়াও দলের অন্যান্য ব্যাটসম্যানরা খেলেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। তাদের সমন্বিত খেলা, ফিল্ডিংয়ে সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং মস্তিষ্কমত্তা পরিকল্পনা দলকে এই রেকর্ড জয় এনে দিয়েছে। এছাড়া ওয়ানডেতে প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে ইংল্যান্ডের ৪১৪ রানের ইনিংস প্রমাণ করে, দল কেবল সিরিজ হারলেও মান ও দক্ষতায় বিশ্বের শীর্ষে রয়েছে।
এদিনের ম্যাচ ইংল্যান্ডের নতুন উদীয়মান ক্রিকেট তারকাদের প্রতিভাও তুলে ধরে। মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের দৃঢ়তা, ওপেনারদের আগ্রাসী খেলা এবং বোলারদের ধারাবাহিক সাপোর্ট একসাথে মিলিয়ে দল যে কীভাবে একটি বড় স্কোর অর্জন করতে পারে তা প্রমাণিত হয়। ইতিহাসের এই দিনটি ইংল্যান্ড ক্রিকেট ফ্যানদের জন্য আনন্দ ও গর্বের।