গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের এক মুখ্য মুখপাত্র হিসেবে সামনের সারিতে ছিলেন উমামা ফাতেমা। “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন”-এর মুখ হিসেবে দায়িত্ব সামলেছেন—কিন্তু শুক্রবার (২৭ জুন) রাতে ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টের মাধ্যমে তিনি ঘোষণা করলেন: একগাদা অভিযোগ তুলে তিনি সেই প্ল্যাটফর্ম থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন।

Source: Jugantor | 28 June 2025 | Pic: Collected
“গত পরশু … কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে… আমার আনুষ্ঠানিক যাত্রা এখানেই শেষ হলো,” লেখেন উমামা। তিনি জানান, এনসিপি নামক রাজনৈতিক সংগঠন গঠনের পর তার জুলাই-সমাপ্ত কর্মসূচির দায়িত্ব নিয়ে দায়িত্ব নিয়ে কাজ শুরু করেন। তবে সম্প্রতি বুঝতে পারেন, নেতৃত্বের “দলীয় লেজুড় ও প্রেসক্রিপশন” অনুসরণ করলে ব্যক্তির ভবিষ্যত বিপন্ন হতে পারে। সেই পথ ঠিক না থাকায় তার ওপর অনলাইন ও অফলাইনে ভয়াবহ চাপ সৃষ্টি হয়।
ফাতেমা আরও বলেন, “যে মানুষদের সাথে আমি মিছিল করেছি, মিটিং করেছি—তরুণদের দিয়ে আমার বিরুদ্ধে smear campaign চালানো হয়েছে।” তার ভাষায়, “পোকার মতো ভিতর থেকে প্ল্যাটফর্মকে খেয়ে ফেলেছে।” একটি নির্ভেজাল আন্দোলন তৈরি করতে গিয়ে তারা আবার নিজেদের স্বার্থে ভাইব্র্যান্স ভেঙে ফেলেছে। Goodwill‑ভিত্তিতে কিছু পথপ্রদর্শকের চেষ্টা থাকলেও, সুবিধাবাদীরা নিজেদের ভোটার ও পদ-কবরে নিজেদের জয় দেখিয়ে দিয়েছেন।
তিনি দৃঢ়ভাবে জানান, “আমি পদত্যাগ পত্র লিখে জমা দিইনি—কারণ আমি মানুষের জীবন ও স্বপ্নে বিশ্বাসী। তবে যখন দেখলাম এই প্ল্যাটফর্ম সাপের মতো আটকে গেছে—তাহলে নিজের মনের গ্রন্থা হিসেবে তাকে ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলাম।” বলছেন, “আমি রাজনৈতিক স্বার্থে আসিনি—পারিনি বাজারদরে অভ্যুত্থানকে বিক্রি করতে।”
উমামা আরও উল্লেখ করেন, “মার্চ–এপ্রিল মাসে… ব্যানার নিয়ে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি এটি সুবিধাবাদীদের হাত হয়ে উঠেছে।” তিনি বলেন, যারা প্রকৃত আগ্রহী যোগ দিয়েছিলেন, তাদেরও পরিস্থিতি কিছুতেই এগোতে দেয়নি। “আমি এই প্ল্যাটফর্মে দেশ সংস্কারে বিশ্বাস করেছি… কিন্তু পর্যায়ে দেখলাম ছোটলোক দরিদ্রতা পাচ্ছে, ভালো স্বপ্ন ছিটকে যাচ্ছে।”
শাখা–উপজেলা স্তরের কমিটি গঠনের সময় যোগ্য ও সততা পোষণকারীদের উঠতে দেয়া হয়নি। তীব্র সমালোচনায় বলছেন, “তারা টিস্যু পেপারের মতো ব্যবহার করেছে”—জিনিস শেষ হলে ফেলে দিয়েছে। শেষমেষ ব্যক্তিগত সচেতনতা, বন্ধু ও শুভানুধ্যায়ীদের পরামর্শে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন।
উমামা মানছেন, এখনও “Empowering Our Fighters” প্ল্যাটফর্ম নিয়ে বৈজ্ঞানিকভাবে কাজ করতে চান—যেখানে ছাত্রেরা নিজে সক্ষমতা গড়ে তুলবে। আন্দোলনের মুখপাত্র হিসেবে থেকে তিনি উপলব্ধি করেছেন, কর্তৃত্ব ও সুবিধাবাদের জালেই প্রকৃত মুক্ততা আটকে।
তিনি লেখেন: “শিক্ষার্থী হিসেবে দাঁড়াতে চাই… আমি দরকারি সময় নিজের মূল্য সংরক্ষণ করতে পারিনি—তবে না বুঝে জনগণের স্বার্থকে আত্মশ্লাঘার স্তম্ভে পরিণত করতে চাইছি না।” তাই “আমি অত্যন্ত অশান্তিতে আছি—আমার একান্ত অভিজ্ঞতা বলছে, এই প্ল্যাটফর্মে আরও উন্নতির লক্ষ্যে কাজ হলেও, সাপের রূপ নেওয়া স্বার্থবাদের ভয়ঙ্কর দিক রয়েছে।”